অবৈধ দোকান বসিয়ে দিনে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায়!

বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর নিচে ও সড়কে অবৈধভাবে বসেছে কাঁচাবাজার। সম্প্রতি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায়।  ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর নিচে ও সড়কে অবৈধভাবে বসেছে কাঁচাবাজার। সম্প্রতি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায়। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর নিচে ও সড়কে অবৈধভাবে কাঁচাবাজার বসানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী চাঁদার বিনিময়ে দোকানিদের সেখানে বসতে দিয়েছেন। ওই জায়গা থেকে প্রতিদিন চাঁদা ওঠে ২৫ হাজার টাকার বেশি।

গত বছরের ২৮ আগস্ট আগানগর এলাকায় নিউ গুলশান সিনেমা হলসংলগ্ন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জায়গা থেকে অবৈধ কাঁচাবাজার উচ্ছেদ করা হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, এর সপ্তাহখানেক পর আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর নিচে ও আগানগর রাস্তায় অবৈধভাবে কাঁচাবাজার বসিয়ে দেন। এই অবৈধ কাঁচাবাজারে তিন শতাধিক অস্থায়ী দোকান আছে। এসব দোকান থেকে প্রতিদিন ২৫-৩০ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। চাঁদা তোলার দায়িত্বে আছেন অপু মিয়া নামের এক ব্যক্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আগানগর কাঁচাবাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ছোট দোকান থেকে দৈনিক ৫০-৭০ টাকা এবং মাছ-মুরগি ও বড় দোকানগুলো থেকে ২০০-২৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়।

সবজি বিক্রেতা মোসলেম উদ্দিন ফরাজী বলেন, তিনি প্রতিদিন দুটি ঝুড়ি নিয়ে তরিতরকারি বিক্রি করেন। দুটি ঝুড়ির জন্য তাঁকে প্রতিদিন ৭০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়।

আরেক দোকানি সেলিম মোল্লা বলেন, ‘প্রতিদিন ১০০ টাকা দিতে হয়। তাতে কষ্ট নাই। কিন্তু আবার আমগো উচ্ছেদ করলে আমরা কোথায় যামু। সরকারের উচিত আমাদের জন্যে একটি স্থায়ী কাঁচাবাজারের বন্দোবস্ত করে দেওয়া।’

আগানগর এলাকার ভ্যানচালক আবদুল কুদ্দুছ বলেন, বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর নিচ দিয়ে আগানগর থেকে বেড়িবাঁধ যাওয়া-আসার জন্য দুটি রাস্তার মধ্যে একটিতে কাঁচাবাজার বসেছে। এতে তাঁদের চলাচল করতে সমস্যা হয়। রাস্তায় দোকান বসায় সব সময় এই রাস্তায় যানজট লেগে থাকে। চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তার ওপর থেকে দোকানগুলো উচ্ছেদ করা উচিত।

আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমানে কোনো কমিটি নেই। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি মীর আসাদ হোসেন বলেন, আগানগর এলাকায় প্রায় তিন লাখ মানুষের বসবাস। এখানে কাঁচাবাজার নেই। তাই সবজি ব্যবসায়ীরা নিজেরাই এখানে বসে মালামাল বিক্রি করছেন।

বাজার থেকে চাঁদা আদায় করা হয় না দাবি করে মীর আসাদ হোসেন বলেন, বাজার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিদ্যুৎ ও জেনারেটরের বিল হিসেবে দোকানিদের কাছ থেকে কিছু টাকা নেওয়া হয়। তিনি বলেন, দোকানিরা অপুকে সার্বিক বিষয় তদারকির দায়িত্ব দিয়েছেন।

জানতে চাইলে অপুও প্রায় একই কথা বলেন।

সওজের ঢাকা বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আমিনুল এহসান প্রথম আলোকে বলেন, কোনো অবস্থাতেই সওজের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে বাজার বসতে দেওয়া যাবে না। এই অবৈধ বাজার অতি দ্রুত উচ্ছেদ করা হবে।