প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণায় 'কূটচাল' দেখছে বিএনপি

রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি।
রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের দাবি সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে কোটা বাতিলের কথা বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সরকারপ্রধানের কোটা বাতিলের ঘোষণা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক—এমন মন্তব্য করে রিজভী দাবি করেন, ‘এই ঘোষণায় কূটচাল রয়েছে। আন্দোলনকারীদের দমানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।’

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে যত না কোটা সংস্কার আন্দোলনের মূল সমস্যাটি সমাধানের দিকনির্দেশনা এসেছে, তার চেয়ে বেশি এসেছে ক্ষোভ প্রকাশ, বিরক্তি ও হুমকি। লক্ষণীয় বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের যে ঘোষণা দিলেন, সেটি বাস্তবায়িত হলে এর বিরুদ্ধে যে-কেউ রিট করলে তা খারিজ হয়ে যাবে। কারণ, সংবিধানে এ বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। কিন্তু কোটার যে বিষয়গুলো বিধানে নেই, সেগুলো সংবিধান সংশোধন ছাড়াই সরকার সংস্কার করে তা কমিয়ে আনতে পারে।

রিজভী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদে বলেছেন, কোটা সংস্কার নিয়ে যখন এত আন্দোলন, তাহলে কোটাপদ্ধতিই বাতিল করা হলো। কিন্তু শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা কোটাপদ্ধতি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছে না, তারা আন্দোলন করছে কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে। দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সরকারের সাবেক অর্থসচিব ড. আকবর আলী খান ছাত্রছাত্রীদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু গতকাল জাতীয় সংসদে এই কোটা বাতিলের কথা বলে প্রধানমন্ত্রী গোটা জাতিকেই হতাশ করেছেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার মুক্ত মন নিয়ে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের কোটা সংস্কারের দাবিকে আমলে নেয়নি। সংবিধানে অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীকে কোটা দেওয়ার বিধান সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রী ও চাকরিপ্রার্থীরা বারবার মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কোটার বিরোধিতা করেনি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সেলিসুজ্জামান সেলিম, সহদপ্তর তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।