দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরিস্বল্পতা, পারাপার ব্যাহত

ফেরিস্বল্পতার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে গাড়ি পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। দুই দিনে পর্যায়ক্রমে চারটি ফেরি বিকল ছিল। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত তিনটি ফেরি বিকল ছিল। এখন ১৩ ফেরিতে গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। এ অবস্থায় উভয় ঘাটে দুই-তিন দিন পর্যন্ত আটকে থাকছে পণ্যবাহী গাড়ি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ দিয়ে প্রতিদিন অন্তত চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার গাড়ি পারাপার হয়। এসব যানবাহন পারাপারের জন্য এই নৌপথে অন্তত ১৮ থেকে ১৯টি ফেরি সব সময় চালু থাকা দরকার। দীর্ঘদিন ধরে তিনটি বড় ফেরি নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পুনর্বাসনে থাকায় এখন চালু রয়েছে ছোট-বড় ১৬টি ফেরি। এর মধ্যে রোরো (বড়) ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান যান্ত্রিক ত্রুটিতে প্রায় দেড় মাস ধরে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতিতে রয়েছে। বাকি ১৫টির মধ্যে এক-দুটি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল থাকছে। রোরো ফেরি শাহ আলীর মাত্র একটি ইঞ্জিন থাকলেও আজ সকালে বিকল হওয়ায় মধুমতিতে রাখা হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার সকাল থেকে যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হয়ে আছে ইউটিলিটি ফেরি রজনীগন্ধা। এ ছাড়া গত শুক্রবার বিকেল থেকে ইঞ্জিনের ত্রুটিতে রোরো ফেরি শাহ জালাল মধুমতিতে ছিল। আজ সকালে শাহ জালাল নৌপথে যুক্ত হয়।

আজ দুপুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ক্যানাল ঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা পণ্যবাহী গাড়ির সঙ্গে যাত্রীবাহী গাড়ি পড়ে আছে। তবে ফেরিঘাট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের তিন কিলোমিটার ছাড়িয়ে এক সারিতে বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এর মধ্যে অধিকাংশ পণ্যবাহী গাড়ি দুই-তিন লাইন ধরে ফেরিতে ওঠার অপেক্ষা করছে। জরুরি, পচনশীল ও যাত্রীবাহী পরিবহন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার হওয়ায় সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি এভাবেই আটকে রয়েছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আটকে থাকা সবাই।

যশোর থেকে আসা ট্রাকচালক ইমরান শেখ বলেন, গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা করে গত শনিবার বিকেলে লম্বা লাইনের পেছনে পড়েন। দুই দিন পর আজ দুপুর পর্যন্ত ফেরি টিকিট হাতে পাননি। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানান, পচনশীল, কাঁচা পণ্যের গাড়ি ও যাত্রীবাহী পরিবহন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করায় সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি দুই-তিন দিন আটকে থাকছে।

ঈগল পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক ভরত মণ্ডল বলেন, রাতের কোচ সকাল সাতটার দিকে পার হয়েছে। দুপুরের দিকে তাঁদের কোম্পানির অন্তত ৪টি যাত্রীবাহী বাস আটকে রয়েছে। এসব গাড়িকে চার-পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এত স্বল্পসংখ্যক ফেরি দিয়ে গাড়ি পার করতে গেলে এভাবেই ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, কিছুদিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গাড়ি পারাপার ব্যাহত হয়েছিল। এখন দুর্যোগ না থাকলেও ফেরিস্বল্পতার কারণে গাড়ি পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় উভয় ঘাটে আটকা পড়ছে গাড়ি।