সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ নিজেই আইন ভেঙেছেন, সমাবেশে বক্তারা

>
  • শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ।
  • আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দাবি।
  • আজ শিক্ষকদের মানববন্ধন।

ছাত্রীদের মুঠোফোন তল্লাশি, গোয়েন্দা নজরদারি ও মামলার ভয় দেখানোর মাধ্যমে সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ নিজেই আইন ভেঙেছেন। এটা শিক্ষকদের জন্য লজ্জার। শিক্ষকদেরই এর প্রতিবাদ করা উচিত। এ ঘটনার পর থেকে চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন এখন নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গতকাল শনিবার বিকেলে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার অবসান চাই’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সুফিয়া কামাল হলসহ সর্বত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান এবং শিক্ষার শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে এই সমাবেশ হয়। ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিকবৃন্দ’ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

আজ রোববার বেলা ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে’ শিক্ষকেরা মানববন্ধন করবেন। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং সুফিয়া কামাল হলের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই কর্মসূচি ডাকা হয়েছে।

গতকাল শাহবাগের সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো একেকটা স্বৈরাচারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনগুলো হলগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ছাত্রীদের মুঠোফোন তল্লাশি, গোয়েন্দা নজরদারি ও মামলার ভয় দেখানোর মাধ্যমে হলের প্রাধ্যক্ষ আইন ভেঙেছেন। কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন তল্লাশি করা অন্যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষক মোসাহিদা সুলতানা বলেন, ‘আমি এখানে শিক্ষক হিসেবে দাঁড়িয়ে কথা বলতে লজ্জাবোধ করছি ৷ আমরা সব সময় নিপীড়নের বিরুদ্ধে ৷ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন একটি বৈষম্যবিরোধী ন্যায্য আন্দোলন ৷ এই আন্দোলন এখন নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে৷’

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, উপাচার্য ও প্রাধ্যক্ষ যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ন্যক্কারজনক। মানুষ এগুলো বোঝে। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনে জনগণের সমর্থন রয়েছে।

সাবেক ছাত্রনেতা বাকী বিল্লাহর সঞ্চালনায় সমাবেশে আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ ও রাখাল রাহা, প্রকাশক রবিন আহসান, শিল্পী অরূপ রাহী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়মন রেজা, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা, শিক্ষার্থী সামান্তা শারমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।