ইডেন কলেজের ছাত্রীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ, আসামির যাবজ্জীবন-জরিমানা

ইডেন কলেজের ছাত্রী শারমীন আকতারকে অ্যাসিড দিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলায় এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার ওই টাকা ভিকটিম শারমীন আকতারকে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন মনির উদ্দিন। এ মামলায় অপর এক আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তিন হলেন মো. মাসুম। একই ঘটনায় করা পৃথক মামলায় আসামি মনির হোসেনকে দণ্ডবিধির ৩২৪ ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে আসামি মনির উদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আসামি মনির উদ্দিন ইডেন কলেজের বাংলা বিভাগের ছাত্রী শারমীনকে উত্ত্যক্ত করতেন। আসামির বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁর মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেন। এতে আসামির মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। ওই অবস্থায় আসামি মনির উদ্দিন ক্ষান্ত হননি। তাঁকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেছেন। ওই কাজে সহায়তার অভিযোগ ছিল মনির উদ্দিনের বন্ধু মো. মাসুমের বিরুদ্ধে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ আসামি মাসুমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। আর আসামি মনির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হওয়ায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইন-২০০০-এর ৫ (খ) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো। হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, সেই আঘাত কতটা হয়েছে, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ না থাকায় আসামিকে দণ্ডবিধির ৩২৪ ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। মহিলা পরিষদের প্যানেল আইনজীবী এম এ সবুর প্রথম আলোকে বলেন, এক আসামিকে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন। আরেকজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর আমরা উচ্চ আদালতে তাঁর বিষয়ে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেব।

২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি ইডেন কলেজে যাওয়ার পথে চানখাঁরপুল মোড়ে পৌঁছালে আসামিরা শারমীনের মাথা ও মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনায় শারমীনের ভাই মহিউদ্দিন আহমেদ বংশাল থানায় এ মামলা করেন।