খুলনা সিটিতে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে

পুরোদমে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। কর্মীরা ব্যস্ত পোস্টার নিয়ে, চলছে মাইকে প্রচারণা। খুলনা সিটি করপোরেশনের কাস্টম ঘাট এলাকার গতকালের চিত্র।  ছবি: প্রথম আলো
পুরোদমে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। কর্মীরা ব্যস্ত পোস্টার নিয়ে, চলছে মাইকে প্রচারণা। খুলনা সিটি করপোরেশনের কাস্টম ঘাট এলাকার গতকালের চিত্র। ছবি: প্রথম আলো
>
  • এবার নতুন ভোটার ৫২ হাজার ৫২৭ জন
  • তাঁরা বলছেন, প্রতীক নয়, প্রাধান্য পাবে প্রার্থীর যোগ্যতা

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী রয়েছেন পাঁচজন। তবে নগরবাসীর ধারণা, প্রধানত লড়াইটা হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ও বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর মধ্যে। আর এই লড়াইয়ে জয়-পরাজয়ের অন্যতম নিয়ামক হবে নতুন ভোটার। তরুণেরা বলছেন, তাঁদের কাছে প্রতীক নয়, প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও গুণাবলিই প্রাধান্য পাবে।
এবার খুলনা সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটার ৫২ হাজার ৫২৭ জন। মোট ভোটারের মধ্যে নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন।
প্রধান দুই প্রার্থীও ইশতেহারে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সব শ্রেণির ভোটারের মন জয় করতে চালাচ্ছেন ব্যাপক প্রচার-গণসংযোগ।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খুলনার সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির মনে করেন, নতুন ভোটাররা উন্নয়ন কিংবা রাজনৈতিক দল নিয়ে ভাবেন না। তাঁরা প্রার্থী বিবেচনা করবেন। ভালো প্রার্থী দেখে ভোট দিতে চাইবেন। নারী ভোটাররাও একই বিবেচনা করতে পারেন।
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মেয়র পদপ্রার্থীই তাঁদের ঘোষিত ইশতেহারে দলীয় ভোটারের বাইরে নারী, তরুণ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট ও শ্রমিকদের ভোট টানতে আলাদা আলাদা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দলগুলোর নেতারাও মনে করছেন, নতুন ভোটাররা সামগ্রিক ফলে প্রভাব ফেলবেন। এ জন্য দলীয় ও জোটের বাইরের ভোটারদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিএনপির নেতারা বলেছেন, নতুন ভোটারদের মন জয় করতে পারলেই খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিগত নির্বাচনের চেয়েও অধিক ভোট পেয়ে নজরুল নির্বাচিত হবেন।
তালুকদার আবদুল খালেকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম মনে করেন, এবারের নির্বাচনে নতুন ভোটাররা একটা বড় ভূমিকা রাখবেন। তাঁরা যাঁকে যোগ্য মনে করবেন, তাঁকে ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী মন্ত্রী, সাংসদ ও মেয়র ছিলেন। আমাদের বিশ্বাস, উন্নয়নের জন্য নতুনরা তাঁকেই বেছে নেবেন।’
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন ভোটার তহমিনা আক্তার বলেন, ‘এমন প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই, যিনি তারুণ্য নিয়ে ভাববেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উদ্যোগী হবেন, সবার প্রতি দায়িত্বশীল হবেন এবং এলাকা মাদকমুক্ত করতে ভূমিকা রাখবেন।’
২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নতুন ভোটার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমার মতো অনেক তরুণই মনে করেন, দল নয়, প্রার্থী হিসেবে মানুষটি কেমন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
গত বুধবার তালুকদার আবদুল খালেক তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য মহানগরের প্রাণকেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থান ওয়াই-ফাই জোন করার ঘোষণা দেন। নগরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে
নারীদের সম্পৃক্ত করা ও তাঁদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কেসিসির পক্ষ থেকে সব রকম পদক্ষেপ নেওয়ার
এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ, সম্প্রীতি ও বিরাজমান
সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখার কথা বলেন।
আর গতকাল নজরুল ইসলাম তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে খুলনায় বসবাসরত সব ধর্মের ও বর্ণের মানুষের মধ্যে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ আরও উন্নয়নে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। মহানগরের উন্নয়নকাজে নারীর স্বার্থ সংরক্ষণ ও নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে চলাচলের পরিবেশ সৃষ্টি, শিক্ষিত তরুণসমাজ ও ছাত্রদের জন্য বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই ও
ইন্টারনেট ব্যবহার এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সিং কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগের কথা জানান।