দাহ্য পদার্থে ঝলসে গেল গৃহবধূর শরীর

বগুড়ায় দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপে শাহনাজ পারভীন ওরফে সীমা (৩৮) নামে এক গৃহবধূর শরীর ঝলসে গেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে শহরের বৃন্দাবনপাড়া এলাকায় ওই গৃহবধূর ওপর দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করা হয় বলে স্বজনেরা দাবি করেছেন। তবে কে বা কারা এই দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করেছে তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

এতে ওই গৃহবধূর মাথা, মুখ, গাল, গলা, বুক ও ডানহাতের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই নারীকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্বজনদের দাবি, তিন শতক জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে এলাকায় এক ব্যক্তির সঙ্গে শাহনাজ পারভীনের বিরোধ ছিল। বিরোধের জেরে অ্যাসিড ছুড়ে ওই ব্যক্তি শাহনাজ পারভিনের শরীর ঝলসে দেন।

হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ওই নারীর শরীরের ৫৫ শতাংশ ঝলসে গেছে। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা ও দুবাইপ্রবাসী আবদুর রহমান প্রায় পাঁচ বছর আগে বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়া এলাকার এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিন শতক জায়গা কিনে বাসা করেন। আবদুর রহমানের চাচাতো ভাই একই এলাকার বাসিন্দা ও শহরের আলোর মেলা হাইস্কুলের শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম দাবি করেন, ওই জায়গা কেনার টাকা-পয়সা লেনদেন নিয়ে জমির মালিকের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে আবদুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী শাহনাজ পারভীনের। এই বিরোধের জেরে সপ্তাহখানেকের মধ্যে আবদুর রহমানের দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই শুক্রবার বিকেলে পূর্ব শত্রুতার জেরে দিনে-দুপুরে ভাবির ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটল।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক নির্মলেন্দু চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে ওই নারীর নাম মোছা. সীমা উল্লেখ রয়েছে। তাঁকে বেলা সাড়ে তিনটায় হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দাহ্য পর্দাথে তাঁর শরীরের মাথা, মুখমন্ডল, বুক, পেট ও হাতসহ শরীরের ৫৫ শতাংশ অংশ ঝলসে গেছে। তবে এই দাহ্য পদার্থ অ্যাসিড কিনা সেটা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভুঁঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কেরোসিন জাতীয় দাহ্য পদার্থে ওই নারীর শরীর ঝলসে গেছে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে কিছু তথ্য পেয়েছে।’