দণ্ডিতদের সঙ্গে সংলাপ নয়: ইনু

আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড মোড়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) জনসভায় বক্তৃতা করেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ছবি: জুয়েল শীল
আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড মোড়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) জনসভায় বক্তৃতা করেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ছবি: জুয়েল শীল

জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দণ্ডিতদের সঙ্গে সংলাপ হবে না। দণ্ডিতদের ভাগ্য আদালত ঠিক করবেন। এদের সঙ্গে জাসদের কোনো আলোচনা হবে না।

আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড মোড়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সামনে নির্বাচন এবং যথাসময়ে ভোট করতে হবে। যারা দণ্ডিত অপরাধী, আগুন-সন্ত্রাসী, রাজাকার এবং জঙ্গিদের সঙ্গে দেন-দরবারের কথা বলছেন- সেই সংলাপ আমরা প্রত্যাখ্যান করি। দণ্ডিতদের ভাগ্য আদালত ঠিক করবেন।’

চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা ও বন্দর এলাকায় তীব্র যানজট নিরসন এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে মাফিয়ামুক্ত করতে স্থানীয় জাসদ এই জনসভার আয়োজন করে। চট্টগ্রামের বন্দর থানা শাখা জাসদের সভাপতি মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তৃতা করেন জাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ শিরীন আখতার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জসীম উদ্দিন প্রমুখ।

সভায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, দণ্ডিত অপরাধীদের নিয়ে দেন-দরবার বন্ধ করুন। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কোনো গণতন্ত্র হয় না, কোনো নির্বাচনও হবে না। রাজনীতির মাঠে একবার রাজাকার, একবার মুক্তিযুদ্ধের সরকার আমরা দেখতে চাই না। এ খেলা বন্ধ করতে হবে। তাই এই আঠারো সালে জঙ্গি এবং জঙ্গি সঙ্গীদের বিদায় জানাতে হবে। এবারই গ্যারান্টি অর্জন করতে হবে যে, আর ভূতের সরকার হবে না, চক্রান্তের সরকার হবে না। এবারই বাংলাদেশকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশের পথে চালিত করতে হবে।

জাসদ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে সর্বত্র জাসদ আছে। উত্থান-পতনে, সুখে-দুঃখে জাসদ আছে। কিন্তু জাসদ কিছু ব্যাপারে অটল। কাউকে ছাড় দেয় না। আমরা রাজাকারকে ছাড় দিই না, জঙ্গিকে ছাড় দিই না, তেঁতুল হুজুরকে রেহাই দিই না। আমরা বৈষম্য মানি না, দলবাজি সহ্য করি না, লুটপাট সহ্য হয় না। আমরা দুর্নীতি এবং ক্ষমতাবাজি পছন্দ করি না।’ তিনি বলেন, ‘জাসদ রাজাকারমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত, সাম্প্রদায়িকতামুক্ত ও পাকিস্তান পন্থামুক্ত শান্তির গণতন্ত্র চায়। আমরা দুর্নীতি ও লুটপাটমুক্ত সুশাসন চাই। আমরা সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন চাই। কিন্তু বৈষম্য চাই না। তাই আমরা মনে করি, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে চমৎকার উন্নয়ন হচ্ছে, তার সুফল গরিব, নারী ও কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিতে হলে বৈষম্য দূর করতে হবে।’

সভায় জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, সামনে নির্বাচন এবং এই নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনা চলছে। কিন্তু জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়তে হলে শেখ হাসিনাকে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হয়।

জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জসীম উদ্দিন চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা-বন্দর আসনে ১৪ দলের প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি তোলেন। তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে যানজট নিত্যসঙ্গী। যানজটের কারণে কেউ সামাজিক অনুষ্ঠানে আসতে চায় না। যদিও বন্দর থেকে ২০ মাইল দূরে কনটেইনার ডিপো হওয়ার নিয়ম রয়েছে। পতেঙ্গা ও বন্দর এলাকার মধ্যে অনেক কনটেইনার ডিপো স্থাপিত হওয়ার কারণে এই অঞ্চলের মানুষ যানজটে কার্যত অবরুদ্ধ।’

চট্টগ্রাম বন্দরকে মাফিয়ামুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে জসীম উদ্দিন বলেন, ‘একজন এমপি আছেন শুধু আখের গোছানোর কাজে। তাঁর নাম বলতে আমার লজ্জা লাগে। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরকে মাফিয়াদের আখড়ায় পরিণত করেছেন। কোকেন ধরা পড়ার পর কারা জড়িত তাঁদের নামধাম বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই এমপি কোকেনের বিরুদ্ধে কথা বলেননি। তিনি শুধু টাকা কামাই করেন। আর সেই টাকা অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় বিনিয়োগ করছেন। তাঁর কাছে প্রশ্ন, তিনি কত টাকা অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় বিনিয়োগ করেছেন?’