শিমের চাষ উর্বরতা বাড়ায়

মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগ মাটির স্বাস্থ্য ও উর্বরতা নষ্ট করছে। শিমজাতীয় উদ্ভিদগুলো মাটিতে ফসলের অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান যোগ করে। আমন ও বোরো ধানের মাঝে অনেক জমিতে শিমজাতীয় ফসলের চাষ সবজির উৎপাদন বাড়ায় এবং মাটির স্বাস্থ্য ভালো রেখে ধানের ফলন বাড়ায়।

ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ বুধবার সকালে একটি প্রকল্পের উদ্বোধনী কর্মশালায় গবেষকেরা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ সম্মেলন কক্ষে ‘ফলন, মাটির পুষ্টি ও উর্বরতা বৃদ্ধি করতে ধান-শিম শস্য ব্যবস্থা প্রণয়ন’ শীর্ষক কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রকল্প সমন্বয়ক ও ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. ছোলায়মান আলী ফকির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

আজকের কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী ফরহাদ কাদির। তিনি বলেন, শিমজাতীয় ফসলগুলো ভিটামিন, মিনারেল এবং শস্য-আমিষের অন্যতম উৎস। আমন ও বোরো ধানের মাঝে প্রায় তিন মাস জমি পতিত থাকে। এই সময়ে স্বল্পমেয়াদি শিমজাতীয় ফসল চাষ করলে কৃষক লাভবান হবেন। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়ে ধানের ফলন অনেকাংশে বাড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের গবেষক অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে প্রায় অর্ধেক ধানি জমিতে আমন ও বোরো চাষ করা হয়। এরপর অনেকটা সময় জমি পতিত থাকে। মাঝের এই সময়ে এসব জমিতে শিমজাতীয় শস্যের চাষাবাদ করলে পুষ্টি নিরাপত্তা বেড়ে যাবে।

শিমজাতীয় পণ্যের বিষয়ে ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, এই গবেষণার মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদি শিমজাতীয় ফসলের টেকসই কিছু জাত কৃষকের কাছে তুলে দেওয়া যাবে। এর ফলে কৃষকেরা সহজে শিমজাতীয় শস্য চাষাবাদ করতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. জসিমউদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক বীরেশ কুমার গোস্বামী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার এবং রাজধানীর কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মো. হজরত আলী উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালার বৈজ্ঞানিক সেশনে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, গবেষক, কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।