ঢাকার মোহাম্মদপুরে ফুটপাতে বানানো হয়েছে প্রস্রাবখানা

মোহাম্মদপুরে ফুটপাতে বানানো হয়েছে প্রস্রাবখানা। গত মঙ্গলবার একজনকে দেখা গেল এ প্রস্রাবখানা ব্যবহার করতে।  ছবি: প্রথম আলো
মোহাম্মদপুরে ফুটপাতে বানানো হয়েছে প্রস্রাবখানা। গত মঙ্গলবার একজনকে দেখা গেল এ প্রস্রাবখানা ব্যবহার করতে। ছবি: প্রথম আলো

মোহাম্মদপুর বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ড নামেই জায়গাটি পরিচিত। একসময় এখানেই ছিল বাসস্ট্যান্ডটি। এখন বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরিত হলেও জায়গার নাম বদলায়নি। এখানে ৫১/সি আসাদ অ্যাভিনিউয়ের উল্টো পাশের ফুটপাতে ছোট ছোট তিনটি দেয়াল তুলে এবং গর্ত করে বানানো হয়েছে প্রস্রাবখানা। গর্ত দিয়ে প্রস্রাব চলে যাচ্ছে পাশের খোলা নর্দমায়। দিনে অন্তত ২০০ টাকা আয় হচ্ছে এই প্রস্রাবখানার মালিকের।

ফুটপাত দখল করে তৈরি করা এই প্রস্রাবখানার একটু দূরেই যাত্রীছাউনি ও বিভিন্ন দোকান। প্রতিবার প্রস্রাব শেষে তিন টাকা দেওয়ার নিয়ম, তা দেয়ালের গায়ে লেখাও আছে। প্রস্রাবখানার পাশের পান-সিগারেটের দোকানের মালিক সাইয়েদ মিয়া। দুই বছরের বেশি সময় ধরে তিনিই এই প্রস্রাবখানার মালিক। মনে খেদ নিয়ে জানালেন, দিনে দুই-আড়াই শ ব্যক্তি এখানে প্রস্রাব করেন, কিন্তু সবাই টাকা দেন না।

 সাইয়েদ মিয়ার বিশ্বাস, ফুটপাতের ওপর প্রস্রাবখানা দেওয়া কোনো বেআইনি কাজ নয়। এতে কত মানুষের উপকার হচ্ছে। বাসের চালক, হেলপার, স্কুলের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন দোকানের কর্মচারী—সবাই তো এই প্রস্রাবখানাটিই ব্যবহার করছেন। প্রস্রাবের পর কনডেন্স মিল্কের খালি কৌটা আছে পানি ব্যবহার করার জন্য। প্লাস্টিকের ছোট একটি ড্রামে পানি দেওয়া আছে। এ বাবদ সাইয়েদ মিয়ার খরচ হয় দিনে ১০০ টাকার মতো। খরচ বাদে তাঁর আয় হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দেখা যায়, একটু পরপর একেকজন আসছেন প্রস্রাব করতে। কেউ টাকা দিচ্ছেন, আবার কেউ না দিয়েই চলে যাচ্ছেন। একজন ট্রাফিক পুলিশকেও দেখা গেল নির্বিকারভাবে এখানে প্রস্রাব করতে। তিনিও টাকা না দিয়েই চলে গেলেন। তবে সাইয়েদ মিয়ার কোনো লোকসান নেই। চাপমুক্ত হওয়ার পর অনেকেই ফিরতি পথে তাঁর দোকান থেকে পান, সিগারেট কিনছেন।

অসুবিধা পথচারীদের। দুর্গন্ধে চারপাশে টেকা দায়। বেশি বিপাকে পড়ছেন ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়া নারীরা।