বাংলাদেশে এই প্রথম প্রাণী হত্যায় দণ্ড দিলেন আদালত

আদালত
আদালত

মাটি চাপা দিয়ে কুকুর হত্যার অভিযোগে রাজধানীর রামপুরায় বাগিচারটেক কল্যাণ সমিতির নিরাপত্তাকর্মী ছিদ্দিক মিয়াকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তা দিতে ব্যর্থ হলে তাঁকে আরও সাত দিন কারাদণ্ডভোগ করতে হবে। মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণীকে হত্যার অভিযোগ এটিই প্রথম রায়।

রায়ে বলা হয়, কুকুরও আমাদের সমাজ এবং প্রকৃতির একটি অংশ। প্রাণী হিসেবে তাঁরও বাঁচার অধিকার আছে। আসামি প্রথমে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে দুটি মা কুকুরকে হত্যা করেন। পরে ১৪টি কুকুরছানা বস্তায় ভরে জীবন্ত মাটি চাপা দিয়েছেন; যা অত্যন্ত দুঃখজনক। রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে ১৯২০ সালের প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইনের ৭ ধারার অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হওয়ায় তাঁকে কারাদণ্ড দেওয়া হলো। একই সঙ্গে আদালত ২০০ টাকা জরিমানা করেন। তা দিতে ব্যর্থ হলে তাঁকে আরও সাত দিন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

২০১৭ সালে ২৫ অক্টোবর দুটি মা কুকুরকে পিটিয়ে আহত করেন ছিদ্দিক মিয়া। পরে ওই দুটি কুকুরসহ তাদের ১৪টি ছানা একটি বস্তায় ভরে জীবন্ত অবস্থায় মাটিচাপা দেন ছিদ্দিক মিয়া। এতে দুটি মা কুকুর ও ১৪টি কুকুরছানা মারা যায়। এ ঘটনায় গত বছরের নভেম্বর পিপল ফর এনিমেল ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান রাকিবুল হক বাদী হয়ে রামপুরা থানায় এ মামলা করেন। এ মামলার আসামি ছিদ্দিক মিয়া ভোলা জেলার চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে।

বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী মিনু রানী রায়। তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, দেশে সাধারণত প্রাণী হত্যার অভিযোগে কেউ মামলা করেন না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই বুঝে না বুঝে প্রাণী হত্যা করা হচ্ছে। কারণ কেউ বিচার চায় না। তাই এই রায় যুগান্তকারী রায়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী কাশেম আলী এ রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মামলায় আসামিপক্ষকে শুনানির জন্য যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল এ মামলার একমাত্র আসামি ছিদ্দিক মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ছয়জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।