গাজীপুরে বাধা কাটায় প্রচারে নেমেছেন আ.লীগ-বিএনপি প্রার্থীরা

গাজীপুর সিটি
গাজীপুর সিটি

গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধা কেটে গেছে। আদালতের রায়ে শুনে খুশি নগরীর ভোটারেরা। সেই সঙ্গে ফের মাঠে নেমে পড়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোট চাওয়ার পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা নির্বাচনের বাধা দূর করতে কে কী ভূমিকা রেখেছেন, সেই প্রচারেও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার পর গাজীপুর নগরীর ভোটারদের মধ্যে ফের আনন্দ-উল্লাস দেখা দিয়েছে। এর আগে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটারদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছিল ক্ষোভ।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সূত্র জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিতের বিরুদ্ধে দুই মেয়র প্রার্থী বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার ও আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম এবং নির্বাচন কমিশন পৃথক পৃথক আপিল করে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আপিলের শুনানি হয়। আপিল বিভাগ আগামী ২৮ জুনের মধ্যে গাজীপুর সিটিতে ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গাজীপুরের টঙ্গী ও চান্দনা চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দমিছিল করেন। এ ছাড়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় হাসান উদ্দিন সরকারের বাড়িতে আনন্দমিছিল করেন।

আপিল বিভাগের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলক এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে উচ্চ আদালত নির্বাচন স্থগিত করেন। ওই দিনই আমি তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন ডেকে আইনি লড়াই, মাঠের লড়াই ও জনগণের ভোটের লড়াই চালিয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিই। পরদিন নির্বাচন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করি। আমি তাতে সফল হই। ভোটের লড়াইয়েও জনগণের সহযোগিতায় সফল হব। গাজীপুর সিটিতে ধানের শীষের পক্ষে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তা নস্যাৎ করতেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।’

হাসান উদ্দিন সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয়নি। ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে আমাদের আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে, গণগ্রেপ্তার করে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার অপচেষ্টা চলছে। নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে।’

অপরদিকে গত ৬ মে দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের খবর পেয়ে ঢাকায় ছুটে যান আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। এরপর থেকে প্রতিদিন তিনি আদালতে যাতায়াত করেছেন। আপিল করেছেন। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর ছয়দানা এলাকায় জাহাঙ্গীরের বাড়িতে নেতা-কর্মীরা ভিড় জমান। এ সময়ে তারা এই রায়কে জাহাঙ্গীর আলমের বিজয় বলে ঘোষণা দেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি নির্বাচনের মাঠে ছিলাম। আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা হয়েছে। গত কয়েক দিন আমি নিজে আদালতে থেকে একটি রায় পেয়েছি। আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। কোনো ষড়যন্ত্রই নৌকা ও আমার জয় ঠেকাতে পারবে না।’

আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জাহাঙ্গীর আরও বলেন, গাজীপুরবাসীর ভোট দেওয়ার যে আগ্রহ ছিল আদালতের রায়ে সেই আশা পূরণ হয়েছে।