বাসের চাপায় পা হারাতে বসেছেন আলাউদ্দিন

হানিফ ফ্লাইওভারে বাস চাপা দিয়ে চলে যাওয়ার পর এভাবেই পড়ে ছিলেন আলাউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
হানিফ ফ্লাইওভারে বাস চাপা দিয়ে চলে যাওয়ার পর এভাবেই পড়ে ছিলেন আলাউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

বাসের চাপায় পা হারাতে বসেছেন কমিউনিটি পুলিশের একজন সদস্য। তাঁর নাম আলাউদ্দিন সুমন। গতকাল শনিবার হানিফ উড়ালসড়কে দায়িত্ব পালন করার সময় গুলিস্তানগামী একটি বাস তাঁকে ধাক্কা দেয়।

এ ঘটনায় পুলিশ বাসচালক ইকবাল হোসেনকে (২৩) গ্রেপ্তার করেছে। আজ রোববার ঢাকার আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এর আগে গত ২৮ এপ্রিল হানিফ উড়ালসড়কে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় রাসেল সরকার নামের এক চালক পা হারান।

ওয়ারী থানা-পুলিশ বলছে, বাসচালকের কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এ ঘটনায় আর কোনো আসামি না থাকায় বাসচালকের আর রিমান্ডে চাওয়া হয়নি।

ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন সুমনের ভাই সালাউদ্দিন পলাশ রোববার বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় মামলা করেন। সেখানে তিনি বলেন, তাঁর ভাই অনেক দিন ধরে হানিফ উড়ালসড়কে কমিউনিটি পুলিশ হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। গতকাল সকাল ১০টায় তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন উড়ালসড়কের ওয়ারীর ওসমানী ইন্টারন্যাশনাল হোটেল বরাবর। এ সময় যাত্রাবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা তারাবো পরিবহনের একটি বাস তাঁকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। বাসের চাকা তাঁর ভাইয়ের বাঁ পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়ারীর উপপরিদর্শক জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী আলাউদ্দিনের অবস্থা খুব খারাপ। তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখে এসেছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, তাঁর পা কেটে ফেলতে হতে পারে।

আলাউদ্দিনের ভাই সালাউদ্দিন পলাশ বলছেন, বাস ধাক্কা দেওয়ার পর তাঁকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিয়ে আসা হয় পঙ্গু হাসপাতালে। পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁর ভাইয়ের বাঁ পা কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জের সানারপাড়ে পরিবার নিয়ে থাকতেন আলাউদ্দিন। তাঁর স্ত্রী ঝুমুর আক্তার জানান, তাঁদের দুই সন্তান। বড় মেয়ে বশরা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। আর ছেলে ইশরাক পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে।

হাসপাতালে থাকা আলাউদ্দিনের স্ত্রী ঝুমুর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘হাসপাতালে ব্যথায় চিৎকার করছেন তাঁর স্বামী। তা দেখে সহ্য করা যায় না।’

আলাউদ্দিনের ভাই সালাউদ্দিন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলছেন, গাড়িচালকেরা একের পর এক মানুষ মেরে চলেছে, কিন্তু তাঁদের কিছুই হয় না। তদন্ত কর্মকর্তা জহির বললেন, দ্রুত তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।