ভোলায় জমিজমার বিরোধ নিয়ে জোড়া খুন

জমিজমার বিরোধ নিয়ে এক ভাই তাঁর ছোট ভাই ও তাঁর শ্যালককে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তাঁদের নাম মো. মাসুম (৪২) ও তাঁর শ্যালক জাহিদুল ইসলাম (৩৭)। হত্যাকারীর নাম মো. মামুন (৪৫)। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভোলার সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্রবেশদ্বারে সেতুর ওপর এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকারীর দুই নাবালক ছেলেকে আটক করেছে। হত্যাকারী মামুন পলাতক রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে শোকের মাতম। আত্মীয়স্বজন ভিড় করছে শোকার্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে। বাপ্তা ইউপির প্রবেশদ্বারে সেতুর ওপর ও সেতুর দুই পাশে ছোপ ছোপ রক্ত জমে আছে। এ সেতুর ওপরই মো. মাসুম ও তাঁর শ্যালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তিদের বাড়ি বোর্ডের ঘর এলাকায়।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামুন ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছোট ভাই মাসুমকে হত্যার উদ্দেশে ধাওয়া করেন। এ সময় মাসুম মুঠোফোনে শ্যালক জাহিদুল ইসলামকে বাঁচানোর জন্য আকুতি জানান। জাহিদুল ইসলাম সেতুর ওপর এলে মামুন প্রথমে জাহিদের বুকে ফুসফুস বরাবর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। পরে মাসুমকে কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয় লোকজন আহত দুজনকে রিকশায় ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনের দুই ছেলে ও স্ত্রীকে আটক করে। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়। ছেলেরা নাবালক।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছগির মিঞা বলেন, লাশ উদ্ধার করে তাঁরা ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন। হত্যাকারীর দুই ছেলেকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহত জাহিদুল ইসলামের বাবা কৃষিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান (৫৫), বলেন, ‘জমিজমার বিরোধ নিয়া ভাই ভাইরে হত্যা করছে। আমার ছেলে ঠেকাইতে গিয়া মারা পড়ছে।’

নিহত ব্যক্তিদের পারিবারিক সূত্রে জানান যায়, নোয়াখালীর সীমানায় কানিবগার চরে ৩৪৫ একর জমি। এ জমির দখল নিয়ে নোয়াখালীর মালিকদের সঙ্গে বিরোধ। মোট ২৯ ব্যক্তি এ জমির মালিকানা দাবি করে। এ জমিকে কেন্দ্র করে মো. মামুন বাদী হয়ে মাসুম ও জাহিদকে আসামি করে ঘটনার আগে ভোলা থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই জমির বিরোধ নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন মামুন।