সমর্থকসহ গ্রেপ্তার আড়াই শতাধিক, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ

খুলনা সিটি করপোরেশন ভবন । ফাইল ছবি
খুলনা সিটি করপোরেশন ভবন । ফাইল ছবি

খুলনা বিএনপি অভিযোগ করেছে, সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গত ২২ দিনে খুলনা নগর থেকে বিএনপির ১৩৯ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর শরিক দলের আছেন ১০ জন। 

বিএনপির অভিযোগ, দলের সদস্য বাদে সমর্থকসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা আড়াই শতাধিক। এর মধ্যে গতকাল রোববার ১৪ জন ও আজ সোমবার ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপির নেতা-কর্মী ও কেসিসি নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নির্বিচারে গ্রেপ্তারের প্রতিকার চেয়ে আজ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
ওই অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করে। কিন্তু খুলনা সিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হচ্ছে না বরং পুলিশ ও ডিবির সদস্যরা দলীয় সরকারের অধীনদের মতো আচরণ করছে এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর কর্মীদের দমন-পীড়নে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে। পুলিশের এ আচরণে জনমনে এবং ভোটারদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপির দাবি অনুযায়ী, ২২ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বাবু। ৩০ এপ্রিল খুলনা মহানগরে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারকাজে অংশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নগরীর গল্লামারী থেকে ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হন বাগেরহাট জেলা যুবদল সভাপতি মেহবুবুল হক কিশোর। ২ মে দিবাগত রাতে নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার হন মহানগর বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ। একই রাতে গ্রেপ্তার হন মহানগর যুবদলের সভাপতি মাহবুব হাসান পিয়ারু। সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপি নেতা মো. অহেদুজ্জামান। দৌলতপুর থানা বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মিঠু। দৌলতপুর থানা যুবদল নেতা মো. ফারুক। সদর থানা শ্রমিক দল নেতা আবু তালেব। সদর থানা শ্রমিক দল নেতা ফারুক হোসেন। সদর থানা শ্রমিক দল নেতা গাউস হোসেন। লবণচরা থানা বিএনপি নেতা নাসির হোসেন। খালিশপুর থানার ১০ নম্বর ওয়ার্ড বাস্তহারা ইউনিট বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা ভুট্টো। খালিশপুর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। খালিশপুর থানা যুবদল নেতা শুকুর আলী। খালিশপুর থানা বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম। খালিশপুর থানা যুবদল নেতা সুমন। ৮ মে রাতে গ্রেপ্তার হন মহানগর বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহসম্পাদক একরামুল কবির মিল্টন। সোনাডাঙ্গা থানার ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন টারজান। সদর থানার ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলম হাওলাদার। দৌলতপুর থানা শ্রমিক দল নেতা লোকমান হোসেন।
এ ছাড়া ৯ মে ১৯ জনকে, ১০ মে ১৭ জনকে, ১১ মে ১৬ জনকে, ১২ মে ১৪ জনকে, ১৩ মে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ওই সময়ে বিভিন্ন উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩০ জন নেতা-কর্মী।
আজ প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশের গণগ্রেপ্তারকে ধিক্কার জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ গ্রেপ্তার-বাণিজ্য করছে। দলের একজন অসুস্থ নেতাকে হাতকড়া পরিয়ে আবার ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি তাঁর (মঞ্জুর) পরিবারও পুলিশের হিংস্রতা থেকে রেহাই পায়নি। এসআই অচিন্ত্য ও বিপ্লবের নেতৃত্বে তিন গাড়ি পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী, ভাইবোন ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ভয়ভীতি দেখিয়েছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে প্রেস বিফ্রিংয়ের সময় জানতে চাইলে তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করবে এটাই স্বাভাবিক। এটা তাদের নিয়মিত কাজের অংশ। এরই সূত্র ধরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার হতে পারে।