খুলনায় একদল যুবক জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মারেন

দুপুর ১২টা বাজে তখন। ভোটাররা কেন্দ্রে এসে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ভোট দিতে পারছেন না। ব্যালট পেপার ফুরিয়ে গেছে জানিয়ে তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার খুলনা শহরে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে রূপসা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। এই প্রতিবেদক ওই কেন্দ্রে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কাউকে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার নিয়ে আসতে দেখেননি।

অভিযোগ উঠেছে, ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট বের করে দিয়ে একদল যুবক ওই কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপারে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ফেলেছেন।

ওই কেন্দ্রে নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে থাকা একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একদল যুবক কেন্দ্রে ঢুকে ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টকে বের করে দেন। এরপর তাঁরা ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে সিল মেরে বাক্সে ভরে দেন। দুপুর ১২টার দিকে ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে এলে তাঁদের বলা হয়, ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে। ব্যালট পেপার আনতে লোক পাঠানো হয়েছে।

ওই কেন্দ্রে মো. শরিফুল ইসলাম নামের একজন ভোটার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ভোট দিতে দুপুর ১২টায় কেন্দ্রে এসে জানতে পারেন, ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে। অপেক্ষা করতে হবে। এক ঘণ্টা পর বেলা একটার দিকে তিনি কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর ‘ভোট দেওয়া হয়ে গেছে’।

ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ইবনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্রে কিছু বহিরাগত এসে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। যে কারণে সাময়িকভাবে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। খুব শিগগির আবার ভোট নেওয়া শুরু হবে।’

এই প্রতিবেদক এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ব্যালট পেপার পৌঁছাতে দেখেননি। আবার ভোট শুরু হতে দেখেননি। কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের এজেন্টদের পাওয়া গেলেও ধানের শীষ প্রতীকের কোনো এজেন্টকে পাওয়া যায়নি।

ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টের খোঁজ করলে নৌকা প্রতীকের এজেন্টরা বলেন, ‘এখানেই ছিলেন। এখন নাশতা খেতে গেছেন।’

জানা গেছে, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৬৬৩ জন।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানান, অল্পসংখ্যক ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ফেলেছেন বহিরাগত যুবকেরা। ওই ভোটগুলো চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে।