পুরো পরিবারের স্বপ্নই গেল ভেস্তে

মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে দেবাশীষের স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবেন। টানাপোড়েনের সংসারে সচ্ছলতা আনবেন। কিন্তু তাঁর আত্মহত্যা সেই স্বপ্ন ভেঙেচুরে দিয়েছে। সঙ্গে দুমড়েমুচড়ে গেছে পুরো পরিবারের স্বপ্নই।

পরিবারের অভিযোগ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেবাশীষের চাকরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে বেশি টাকা ঘুষ দিয়ে অন্যজনকে নেওয়া হচ্ছে। এ খবর শুনে গত সোমবার দেবাশীষ আত্মহননের পথ বেছে নেন।

দেবাশীষ মণ্ডল খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কাঁঠালতলী গ্রামের পরিমল মণ্ডলের ছেলে। তিনি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় হন। পরে তিনি কুষ্টিয়ায় বেসরকারি রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। সেখানেই আত্মহত্যা করেন তিনি।

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ১২ মে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন দেবাশীষ। পরীক্ষার পর বাবাকে ফোন করে চাকরিটা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। এ জন্য ১৫ লাখ টাকা জোগাড় করতে বলেন। পরে ২০ লাখ টাকা দেওয়ায় অন্য প্রার্থীর চাকরি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে দেবাশীষ জানতে পারেন। এ কারণে ক্ষোভ-অভিমানে তিনি আত্মহত্যা করেন। মঙ্গলবার কাঁঠালতলী গ্রামে দেবাশীষের শেষকৃত্য হয়েছে।

দেবাশীষের ছোট ভাই আশিস মণ্ডল বলেন, ‘ওর চাকরির জন্য তাড়াহুড়া করে ১০ লাখ জোগাড় করি। এই টাকা দেওয়ার জন্য নিয়োগ কমিটির সভাপতির (বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য) সঙ্গে নাকি সরাসরি কথা হয়েছিল। কিন্তু পরে চাকরি না হওয়ার কথা শুনে আমার ভাই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক ও অন্যান্য পদে নিয়োগের জন্য গত ২৪ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক পদে চাকরিপ্রার্থী হিসেবে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ছয়জন প্রার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হারুনর রশিদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি শুনেছি ওই ছেলে সুইসাইড করেছে। কিন্তু কী কারণে করেছে, জানা নেই।’