অর্ধেক কাউন্সিলর প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

>১৪৮ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ৬৭ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৬ জন বিএনপির ৫ জন।
খুলনা সিটি
খুলনা সিটি

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ নেওয়া কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে এবার। আট ভাগের এক ভাগ ভোট কম পাওয়ায় ৬৭ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কেসিসি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেসরকারি প্রাথমিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এবারের নির্বাচনে কেসিসির ৩১টি ওয়ার্ডে সাধারণ ১৪৮ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে সাধারণ ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ফলাফল স্থগিত আছে। ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন ১০ জন। ফলাফল স্থগিত হওয়া সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ জন প্রার্থী লড়াই করছেন।
নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, স্থানীয় সরকারের (সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০১০) বিধি ৪৪ / ৩ ধারায় কোনো প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের এক-অষ্টমাংশ ভোট না পেলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। একই সঙ্গে এই জামানতের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়।

আ. লীগ ও বিএনপির যাঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ছয়জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাঁরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শাকিল আহমেদ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হারুন অর রশিদ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ওয়াজেদ আলী, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের এ এস এম সায়েম মিয়া, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের টি এম আরিফ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ আবদুল আজিজ।
আর বিএনপি-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা জামানত হারিয়েছেন তাঁরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মহিউদ্দীন, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইমতিয়াজ আলম, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের এস এম আবদুর রহমান, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ছাবির হোসেন ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের এস এম মনিরুল ইসলাম।

বড় ভাইয়ের কাছে ছোট ভাইয়ের হার
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুই ভাই কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওয়ার্ডটিতে বড় ভাই আনিছুর রহমান বিশ্বাস ঘুড়ি প্রতীক নিয়ে ও ছোট ভাই আতিকুর রহমান বিশ্বাস ব্যাডমিন্টন র‍্যাকেট প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। ওয়ার্ডের ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে বড় ভাই আনিছ ৭ হাজার ২৬ ভোট পেয়ে জয় পেলেও ছোট ভাই আতিকুর রহমান পেয়েছেন ৮৮ ভোট।

বিশ্বাস পরিবারের চার প্রার্থীর জয়
খুলনার অন্যতম প্রভাবশালী বিশ্বাস পরিবার থেকে পাঁচ প্রার্থী বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এর মধ্যে একই ওয়ার্ডের আপন দুই ভাই ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক ভাইসহ জিতেছেন বাকি তিনজন। সাবেক সাংসদ গাফফার বিশ্বাসের জামাতা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সুলতান মাহমুদ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের আনিছুর রহমান বিশ্বাস জয় পেয়েছেন। সুলতান মাহমুদ ও আনিছ দুই ভায়রা। গাফফার বিশ্বাসের দুই বোনের ছেলেকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন এলাকাবাসী। তাঁরা হলেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ হাফিজুর রহমান ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের এস এম খুরশিদ আহম্মেদ।

মাত্র ২২ ভোটে হার
১১ নম্বর ওয়ার্ডে মুন্সি আবদুল ওদুদ আওয়ামী লীগের সমর্থনে মিষ্টিকুমড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আর বিএনপির সমর্থনে টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বর্তমান কাউন্সিলর মো. ইউনুস আলী সরদার। শেষ লড়াইয়ে ওদুদের কাছে ২২ ভোটে হেরে গেছেন তিনি।

টানা তিনবার কাউন্সিলর যাঁরা
৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতান মাহমুদ, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে আমিনুল ইসলাম, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে আশফাকুর রহমান, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের শামসুজ্জামান, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের আলী আকবর ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মাওলা এবার জিতে টানা তিনবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের আনিছুর রহমান বিশ্বাস, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইমাম হাসান চৌধুরী টানা চারবার এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ হাফিজুর রহমান ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ মো. গাউসুল আযম টানা পাঁচবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।