বনরুইটির পা সারেনি, নেওয়া হচ্ছে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

উদ্ধার হওয়া বনরুই। শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, ২৬ এপ্রিল। ছবি: শিমুল তরফদার
উদ্ধার হওয়া বনরুই। শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, ২৬ এপ্রিল। ছবি: শিমুল তরফদার

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লোকালয়ে ধরা পড়া বনরুইটিকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আজ শুক্রবার পর্যন্ত প্রাণীটির ক্ষতিগ্রস্ত পা দুটির অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।

গত মঙ্গলবার সকালে বন বিভাগের মাধ্যমে বিপন্ন প্রজাতির এই প্রাণীটিকে গাজীপুরে পাঠানো হয়। ওই দিন বিকেল থেকে পার্কের কোয়ারেন্টাইন জোনে রেখে এর চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসায় নেওয়া হচ্ছে বিদেশি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। এর আগে বনরুইটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় শ্রীমঙ্গলের বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পার্কের কোয়ারেন্টাইন শেডে গিয়ে দেখা যায়, বনরুইটি গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। মাঝেমধ্যে পুরো শরীর লম্বা করে হাঁটার চেষ্টা করছে। পেছনের দুটি পায়ে কোনো শক্তি পাচ্ছে না। খাবার দিলে সামনের পায়ে ভর দিয়ে নিজের শরীর টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়।

বনরুইকে খাওয়াচ্ছেন বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব। শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, ১৫ মে। ছবি: শিমুল তরফদার
বনরুইকে খাওয়াচ্ছেন বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব। শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, ১৫ মে। ছবি: শিমুল তরফদার

সাফারি পার্কের বন্য প্রাণী চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, প্রাণীটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত রয়েছে। পেছনের দুটি পায়ের আঘাত যথেষ্ট গুরুতর। ওষুধ দেওয়া হয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টা একে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে পরিচর্যা করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে অস্ট্রেলিয়ার ‘জো ভিক্টোরিয়ার’ বন্য প্রাণী চিকিৎসক মাইকেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁর পরামর্শে বর্তমানে বনরুইটিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শরীরে আঘাত থাকায় খাবারে অনীহা দেখাচ্ছে বনরুইটি। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ওর চিকিৎসা চলছে।

গত ২৬ এপ্রিল শ্রীমঙ্গলের ইছবপুর গ্রামে ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়ে আহত অবস্থায় লোকালয়ে ধরা পড়ে বিপন্ন প্রজাতির বনরুই। সে সময় গ্রামের মানুষের হাতে প্রাণীটি আহত হয়। পরে লোকমুখে খবর পেয়ে বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন এটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। গত মঙ্গলবার থেকে বনরুইটির আশ্রয় হয়েছে সাফারি পার্কে।