পুলিশ কর্মকর্তার কারণে রক্ষা পেল সাহসী মেয়েটি

মেয়েটি (১৬) এবার এসএসসি পাস করেছে। উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদনও করেছে। সে অসাধারণ উদ্যমী ও সাহসী। তাই প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জে আসে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিতে। আজ শনিবারও এসেছিল। তবে সেই সাহসী মেয়েটিকে হারাতে চেয়েছিল এক বখাটে। শেষ পর্যন্ত আকস্মিক এক পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বখাটেকেই হারতে হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বখাটেকে অর্থদণ্ড দিয়েছেন।

অভিযুক্ত বখাটের নাম কে এম শামীম রেজা (২১)। পেশায় পাদুকা বিক্রেতা শামীম রেজার বাড়ি উপজেলার বড় বিহানালী ইউনিয়নের মুরারীপাড়া গ্রামে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের একটি গ্রামের উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি-ইচ্ছুক ওই ছাত্রী বাইসাইকেল চালিয়ে উপজেলা সদর থেকে নিজ বাড়ি ফিরছিল। বেলা একটার দিকে ভবানীগঞ্জ সেতু থেকে নিচে নামলে আগ থেকে ওত পেতে থাকা বখাটে শামীম বাইসাইকেল থেকে ওই ছাত্রীকে নামিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। এ সময় ছাত্রীটি চিৎকার শুরু করে। ঠিক ওই সময় সেখান দিয়ে সাদাপোশাকে যাচ্ছিলেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৌরভ কুমার চন্দ্র। তিনি এগিয়ে এসে শামীমকে আটক করেন।

খবর পেয়ে বেলা দেড়টায় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুন পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অভিযুক্ত যুবকের বিচার করা হয়। আদালতে শামীম নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। এ সময় তাঁর বিরুদ্ধে ৩০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে অর্থদণ্ড দিয়ে শামীমকে তাঁর স্বজনেরা ছাড়িয়ে নেন।

এসআই সৌরভ কুমার চন্দ্র বলেন, তাঁর সামনেই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়েছে। সাদাপোশাকে থাকায় শামীম তাঁকে চিনতে পারেননি।

মেয়েটির তিনজন স্বজন বলেন, সে খুব সাহসী ও উদ্যমী। কোনো বখাটে বা দুষ্কৃতকারীরা তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না বলে প্রায়ই পরিবারের সদস্যদের জানাত। গ্রামে বসবাস করেও সাহস নিয়ে প্রতিদিন একাকী ১০ কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করত। তবে সে এ রকম ঘটনার শিকার হবে তা ভাবতে পারেননি বলে স্বজনেরা জানান।