২০ মে চা শ্রমিক দিবস ঘোষণার দাবি

ব্রিটিশদের গুলিতে নিহত চা-শ্রমিকদের স্মরণে শহীদবেদিতে আজ রোববার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিংগা চা-বাগানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান চা-শ্রমিকেরা। ছবি: শিমুল তরফদার
ব্রিটিশদের গুলিতে নিহত চা-শ্রমিকদের স্মরণে শহীদবেদিতে আজ রোববার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিংগা চা-বাগানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান চা-শ্রমিকেরা। ছবি: শিমুল তরফদার

ব্রিটিশ সরকারি বাহিনীর গুলিতে নিহত চা-শ্রমিকদের স্মরণে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় আলোচনা ও শোভাযাত্রা থেকে ২০ মেকে চা-শ্রমিক দিবস ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে। আজ রোববার উপজেলার মিরতিংগা চা ছাত্র-যুব সংঘ আয়োজিত কর্মসূচি থেকে চা-শ্রমিকেরা এ দাবি জানান।

ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে ১৯২১ সালের ২০ মে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক নিজেদের জন্মস্থান ভারতে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। তখন চাঁদপুরের মেঘনাঘাটে গুলি চালিয়ে চা-শ্রমিকদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। সেই থেকে দিনটিকে চা-শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন চা-শ্রমিকেরা। তবে দিবসটি এখনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি। আজকের আলোচনা সভায় এদিনের গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০ মে-কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি ওঠে।

দিনটি স্মরণে মিরতিংগা চা-বাগানে শহীদবেদি প্রাঙ্গণ থেকে চা-শ্রমিকেরা একটি শোভাযাত্রা বের করেন। শোভাযাত্রাটি চা-বাগান ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। গুলিতে নিহত চা-শ্রমিকদের স্মরণে শহীদবেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে মিরতিংগা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নিরঞ্জন তন্তুবাইয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি বলেন, ‘চা-শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণে দীর্ঘদিন ধরে মজুরি বৃদ্ধি, ভূমি অধিকার, বাসস্থান ও চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এসব বাস্তবায়ন না হওয়ায় তাঁদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।’

রামভজন কৈরি বলেন, ‘অবহেলিত চা-শ্রমিকদের বাসস্থানের জায়গাটুকু তাঁদের নিজের নামে দিতে হবে। যাতে বাগান কর্তৃপক্ষ যখন-তখন ভূমি থেকে চা-শ্রমিকদের উচ্ছেদ করতে না পারে। যে বসতভিটায় প্রায় দেড় শ বছর ধরে বসবাস করে আসছি, আমরা চাই সরকারের মাধ্যমে সেটা আমাদের নামে দেওয়া হোক। যদি সেটা করা হয়, তাহলে আমরা দাসত্ব জীবন থেকে মুক্তি পাব।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য করেন চা-শ্রমিক নেতা পরাগ বাড়ই, চা-শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ধনা বাউড়ি, চা-শ্রমিক নেত্রী রীতা পাইনকা, কুলচন্দ্র তাঁতী, নিতাই তাঁতী প্রমুখ।