খালেদার জন্য কারাগারের অনেক নিয়ম ভাঙা হয়েছে: কাদের

ওবায়দুল কাদের। প্রথম আলো ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যে কক্ষে আছেন, সেটিকে সাজানো হয়েছে। একদম ফার্স্টক্লাস জায়গায় আছেন।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক ইফতার অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।

গতকাল রোববার ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আজকে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি আপনারা উপলব্ধি করছেন। আজ খালেদা জিয়া পরিত্যক্ত জেলখানার চার দেয়ালে মধ্যে কঠিন সময় অতিক্রান্ত করছেন। তাঁকে একটি মিথ্যা মামলায় বিনা দোষে কারাবন্দী করা হয়েছে, তিনি সুবিচার থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছেন।’

বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল ইসলাম) ওখানে যে কথা বলেছেন, আমরাও জেলখানায় ছিলাম। খালেদা জিয়া যেই জায়গাটায় আছেন, সেটা আমরা দেখেছি। সেখানে যেভাবে রুমটাকে সাজানো হয়েছে। একদম ফার্স্টক্লাস জায়গায় আছেন, যেখানে আমরাও ছিলাম না।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাস সম্পর্কে মন্ত্রী কাদের বলেন, ‘দেখুন, কারাগারে ব্যক্তিগত গৃহপরিচারিকা রাখার কোনো সুযোগ নেই। সেটাও দেওয়া হয়েছে। তাঁর জন্য ব্যক্তিগত চিকিৎসক রাখার কোনো নিয়ম নেই, এই নিয়মও খালেদা জিয়ার জন্য ভাঙা হয়েছে, কারণ তিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে আমরা অপমান করতে চাই না। জেলে দিয়েছেন আদালত, মুক্তি দিতে পারেন আদালত। কিন্তু মানুষ হিসেবে মানবিকতার দিক দিয়ে তাঁরও বয়স হয়েছে, তাঁকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া, তাঁর সঙ্গে মানবিক আচরণ করার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো গাফিলতি নেই।’

বিএনপি ইফতার নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ইফতারের সময় রাজনৈতিক বক্তব্য দেন না, এমনকি আমিও রাখি না। কিন্তু ফখরুল ইসলাম আলমগীররা ইফতার নিয়েও রাজনীতি করেন। ইফতারের সময় তাঁরা রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ান। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাঁরা দেশের মানুষের কাছে তো নালিশ করেনই, ইফতার সামনে রেখে বিদেশিদের কাছেও নালিশ করেন।’

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা ছাড়া আর কিছু না। রাজনীতিতে তারা এত নিচে নেমে গেছে যে ইফতার অনুষ্ঠানে এসে রাজনীতি করছে এবং বিদেশিদের কাছে অশ্রাব্য ভাষায় নালিশ করছে এবং যেটা রাজনৈতিক ভাষা নয়, সেটাও বলছে। আমরা সেটা করি না, করব না।’

প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে গেলে তা হবে বিরোধী দলের জন্য আত্মঘাতী, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এ বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আত্মঘাতীর বিষয়টি বিএনপির মূল্যায়নের ব্যাপার। তাদের জন্য আত্মঘাতী কি না, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে তাদের জন্য নির্বাচন আটকে থাকবে না। নির্বাচন, নির্বাচনের পথে চলবে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। সংবিধান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলেও ওই নির্বাচনে বৈধতার কোনো সংকট হবে না। তিনি বলেন, গতবার নির্বাচনে বিএনপি আসেনি, তারপরও নির্বাচনের বৈধতার কোনো সংকট হয়নি।