সীতাকুণ্ডে ত্রিপুরা কিশোরী হত্যায় জড়িত দুজন গ্রেপ্তার হয়নি

দুই ত্রিপুরা কিশোরী হত্যার প্রতিবাদে সভা। বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। সীতাকুণ্ড, ২১ মে। ছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস
দুই ত্রিপুরা কিশোরী হত্যার প্রতিবাদে সভা। বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। সীতাকুণ্ড, ২১ মে। ছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস

সীতাকুণ্ডে দুই ত্রিপুরা কিশোরী হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আজ সোমবারও প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত ছিল। 

আজ দুপুরে সীতাকুণ্ড উপজেলা সদরের মহান্তআস্তানায় ননীগোপাল সাহা যাত্রীনিবাসে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গত শুক্রবার দুই ত্রিপুরা কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ও ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আবুল হোসেন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে ওই যুবক দুই কিশোরীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। যুবক জানান, ওই হত্যাকাণ্ডে তাঁকে আরও দুজন সহযোগিতা করেন।

সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা পাড়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার চার দিন পার হয়ে গেলেও সীতাকুণ্ডের সাংসদ দিদারুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন, সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বদিউল আলমসহ জনপ্রতিনিধিরা দেখতে যাননি। আজকের সভায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা।
আজকের সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। সাংসদের নাম উল্লেখ করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আপনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত এমপি দিদারুল আলম। আজকে চার দিন ঘটনা ঘটে গেল, আপনি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালেন না। এলাকার মেয়র তিনিও আসার সময় পেলেন না। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই লোকগুলোর ভোট কি আপনার প্রয়োজন নেই?’

ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘যদি আপনারা এ দেশের সংখ্যালঘুদের আপনাদের ভোটব্যাংক মনে করে তাদের স্বার্থকে বিবেচনায় না রেখে রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে চান, তাহলে আপনারা চরম ভুল করবেন। এখনো সময় আছে, মানুষের পাশে দাঁড়ান।’

আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) নূরেআলম মিনা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ১৯ মে ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি পথ ঝুঁকি হওয়ায় আর যেতে পারেননি। গতকাল তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এসপি নূরেআলম মিনা আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া তিনজনের দুজন কিলিং মিশনের অংশ নিয়েছে। অপরজন পাহারায় ছিল। দ্বিতীয় হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সে এখনো সেই পাহাড়ে রয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। ঘন ঘন জায়গা বদল করছে। খুব কম সময়ে তাকেও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান।

এসপি নূরে আলম মিনা বলেন, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই দুই কিশোরীকে ধর্ষণের আলামত পায়নি। এমনকি তাদের শরীরে বিষের উপস্থিতিও ছিল না।

ঐক্য পরিষদের ঢাকা মহানগরের সভাপতি প্রকৌশলী পরিমল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস হোড়, সীতাকুণ্ড উপজেলার সভাপতি পঙ্কজ কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব কুমার দে, চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, আদিবাসী ফোরামের চট্টগ্রামের সভাপতি শরৎয্যোতি চাকমা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফুল কুমার ত্রিপুরা, সীতাকুণ্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।