পুলিশের হস্তক্ষেপে ২০ মিনিট পর সরে গেলেন মেয়র

ছাত্রলীগের সঙ্গে দ্বন্দ্বে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র পূর্বঘোষণা অনুসারে ঘটনাস্থলে অবস্থান কর্মসূচি নেওয়ার ২০ মিনিট পর পুলিশের হস্তক্ষেপে সরে যান। একই সময় সেখানে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগকেও সরিয়ে দেয় পুলিশ। আজ মঙ্গলবার রাজশাহী নগরে এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল সোমবার রাতে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় একটি বিলবোর্ডে ব্যানার টাঙানো নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে ছাত্রলীগের উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জের ধরে আজও সেখানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল।

মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন দাবি করেন, তাঁর ব্যানার সরিয়ে ছাত্রলীগ সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের ব্যানার টাঙিয়েছে। আজ দুপুর ১২টার মধ্যে সেই ব্যানার সরানো না হলে তিনি সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন গতকাল। সেই ঘোষণা অনুসারে তিনি আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জিরো পয়েন্ট এলাকায় আরডিএ মার্কেটের সামনে চারজন কাউন্সিলর নিয়ে অবস্থান নেন। এর কয়েক মিনিট পর সেখানে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এসে সমবেত হন। এর কিছু পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও সেখানে জড়ো হন। দুই পক্ষের মাঝখানে গিয়ে অবস্থান নেয় পুলিশ। ওই সময় দুই পক্ষই স্লোগান দিতে থাকে এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। দুই পক্ষকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানাতে থাকে পুলিশ। পরে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে মেয়র দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে সেখান থেকে ছাত্রলীগকেও সরিয়ে দেয় পুলিশ।

রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় একটি বিলবোর্ডে ব্যানার টাঙানো নিয়ে গতকাল রাত ১০টার দিকে দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি রকি কুমার ঘোষ দাবি করেন, নগরের জিরো পয়েন্ট এলাকার একটি বিলবোর্ডে গতকাল রাতে হঠাৎ করে মেয়র ও বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেনের ব্যানার টাঙানো হয়। অথচ সেখানে আগে থেকেই সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের একটি ব্যানার ছিল। ওই ব্যানার সরিয়ে বর্তমান মেয়রের ব্যানার টাঙানো হয়।

রকি কুমার ঘোষ জানান, এ খবর পেয়ে তিনি, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় মেয়র মোসাদ্দেক হোসেনও সেখানে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়।

মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন দাবি করেন, জোর করে তাঁর ব্যানার সরিয়ে ফেলেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এরপর সেখানে সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামানের ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যানার তিনি সরিয়ে নিজের ব্যানার টাঙানোর দাবি জানান। সেটি আজ দুপুরের মধ্যে না হলে মেয়র মোসাদ্দেক সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মেয়রের পক্ষের লোকজনের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

মেয়র মোসাদ্দেক হোসেনের ব্যানারে মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানানো হয় নগরবাসীকে। আর সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের ব্যানারে রাজশাহী মহানগরকে উন্নয়নের মাধ্যমে বদলে দেওয়ার স্লোগানসহ নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়।

পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে বর্তমান মেয়রের ব্যানারের জায়গায় সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এখনো সেখানে সাবেক মেয়রের ব্যানারই টাঙানো আছে।