চট্টগ্রামে মৃত নবজাতককে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

এক মৃত নবজাতককে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের চকবাজারের পিপলস হাসপাতালের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। অভিভাবকেরা প্রথমে নবজাতক চুরির অভিযোগ করেন। পরে একই দিন সন্ধ্যায় ডাস্টবিন থেকে খুঁজে এনে মৃত নবজাতককে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চান্দগাঁওয়ের খাজা রোডের বাসিন্দা আমেনা বেগম প্রসববেদনা নিয়ে পিপলস হাসপাতালে ভর্তি হন। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চিকিৎসক বিশাখা ঘোষ ও কুসুম আক্তার তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। পৌনে সাতটার দিকে ওই নারী যমজ সন্তান প্রসব করেন। এর মধ্যে ছেলে নবজাতকটি মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। আমেনার সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নবজাতকদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

চিকিৎসক বিশাখা ঘোষের দাবি, অস্ত্রোপচারের পর একটি ট্রেতে করে তুলায় মোড়ানো মৃত শিশুটিকে স্বজনদের দেখানো হয়। অপর নবজাতকটির ওজনও কম ছিল। যদি মৃত নবজাতককে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়, তবে সেটি অপরাধ।

স্বজন ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আমেনা বেগমের স্বামী মো. ফরিদ মধ্যপ্রাচ্যপ্রবাসী। আমেনার আরেকটি দুই বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে। সকালে অস্ত্রোপচারের সময় আমেনার মা আয়েশা বেগমসহ অন্য স্বজনেরা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। অস্ত্রোপচার কক্ষে আয়েশা বেগমকে ডেকে মৃত শিশুটি দেখানো হয়। আয়েশা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৃত শিশুটি নিয়ে যাব বলে আমরা জানিয়েছিলাম।’

পরে সকাল ১০টার দিকে অন্য স্বজনেরা এসে মৃত নবজাতককে দেখতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, নবজাতককে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এরপর স্বজনেরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে নবজাতক চুরির অভিযোগ আনে।

আমেনার ননদ খালেদা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কন্যা নবজাতককে দিলেও মৃত ছেলেকে দেওয়া হয়নি। চাইলে জানানো হয়, তাকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে মৃত শিশু ফেরতের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্বজনদের কথা হয়। এ সময় পুলিশের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে মেডিকেল বর্জ্যের গাড়ি থেকে মৃত নবজাতককে খুঁজে আনা হয়।

পিপলস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুবাস চন্দ্র সূত্রধর প্রথম আলোকে বলেন, মৃত নবজাতক ফেলে দেওয়ার বিষয়টি মানবিক হয়নি। যে নার্স কিংবা আয়া এটি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আজিজ বলেন, ডাস্টবিনে মৃত সন্তান ফেলে দেওয়ার বিষয়টি ঠিক হয়নি। তবে স্বজনেরা বিষয়টি পরে মেনে নিয়েছেন।