মেয়েটি মুখ বুজে সহ্য করতে চেয়েছিল সব

মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এলাকার এক তরুণের সঙ্গে তার সখ্য। এই সূত্র ধরে কৌশলে বাড়ি নিয়ে তরুণ তাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি চেপে যেতে বলেন তরুণ। জানালে এর পরিণাম ভালো হবে না বলে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। মেয়েটি চেপে যায়, মুখ বুজে এ নির্যাতন সহ্য করে। কিন্তু সে বুঝতে পারেনি আরও ভয়ংকর দিন অপেক্ষা করছে। কয়েক দিন পর সেই তরুণের এক সহযোগী মেয়েটিকে জানান, আগের ধর্ষণের ঘটনায় ভিডিওচিত্র ধারণ করা আছে। এবার তাঁর পালা। এতে রাজি না হলে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেওয়া হবে। গ্রামের সব মানুষকে দেখানো হবে ওই ভিডিওচিত্র। মেয়েটি পড়ে উভয়সংকটে।
এরপর তরুণের সহযোগী ওই যুবক গত শুক্রবার দুপুরে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। মেয়েটি এবারও মুখ বুজে সহ্য করে। চেপে যেতে চায়। কিন্তু বাগড়া দেয় রক্তপাত। হার মানে সে। অসুস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে অভিভাবকদের কাছে সব খুলে বলে। গত মঙ্গলবার তার মা শাজাহানপুর থানায় যান। এ ঘটনায় মামলা করেন।

গতকাল বুধবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার দুই আসামি উপজেলার ডেমাজানি দক্ষিণপাড়ার সাজেদুর রহমান (১৯) ও আবদুর রহিমকে (২৫) গ্রেপ্তার করে।
এজাহার ও ভুক্তভোগীর স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ১১ মে দুপুরে ছাত্রীকে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন তরুণ সাজেদুর। তিনি মেয়েটিকে নানা ভয়ভীতি দেখান। বিষয়টি কাউকে বলতে বারণ করেন। এর এক সপ্তাহ পর দুপুরে আসামি আবদুর রহিম ওই ছাত্রীকে কৌশলে ধর্ষণ করেন। এবার তাকে বিষয়টি চেপে যেতে বলা হয়। ভয়ে-আতঙ্কে মেয়েটি কুঁকড়ে যায়। মরে গেলেও এই পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা কাউকে বলবে না বলে মনে মনে স্থির করে। কিন্তু ধর্ষণের ফলে রক্তক্ষরণ হয়। মেয়েটি যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। একপর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর সে অভিভাবকদের কাছে বিষয়টি জানায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গতকাল অতিরিক্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শ্যাম সুন্দর রায়ের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ওই ছাত্রী। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই ছাত্রী বলে, সাজেদুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল তার। এই সুযোগ নিয়ে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১১ মে ধর্ষণ করেন সাজেদুর। এরপর ১৮ মে সাজেদুরের বন্ধু আবদুর রহিমও তাকে ধর্ষণ করেন। এ সময় রক্তক্ষরণ হয়। তখন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এ কথা কাউকে জানালে ছাত্রীর বাবা ও ছোট বোনকে মেরে ফেলার হুমকি দেন আবদুর রহিম।

এসআই রোম্মান হাসান বলেন, ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না, তা জানতে শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা করা হয়েছে। তা ছাড়া দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।