ইফতারে শেরপুরে 'ডাইলের আমিত্তির' জন্য লম্বা সারি

উচ্চ তাপে তেলে ভাজা হচ্ছে শেরপুরের জনপ্রিয় সুস্বাদু মিষ্টি ‘ডাইলের আমিত্তি’। ছবি: দেবাশীষ সাহা রায়
উচ্চ তাপে তেলে ভাজা হচ্ছে শেরপুরের জনপ্রিয় সুস্বাদু মিষ্টি ‘ডাইলের আমিত্তি’। ছবি: দেবাশীষ সাহা রায়

দেখতে জিলাপির মতো। প্রক্রিয়াও অনেকটাই তাই। চিনির শিরায় তৈরি হয়। কিন্তু এর নাম ‘ডাইলের আমিত্তি’। শেরপুর সদরের মানুষের এ জিনিস ছাড়া ইফতার জমে না। তাই লম্বা সারিতে ‘ডাইলের আমিত্তি’ পাওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে থাকেন। 

শেরপুর জেলার প্রসিদ্ধ মিষ্টির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই ‘ডাইলের আমিত্তি’। ইফতারিতে ঝাল খাবারের পাশাপাশি রোজাদারদের কাছে এই মিষ্টি এক বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে পরিণত হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রমজান মাসে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এ মিষ্টির জন্য প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক ক্রেতার সমাগম ঘটে শহরের ঘোষপট্টির মিষ্টির দোকানগুলোয়।

ঘোষপট্টির দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক মঙ্গল চন্দ্র ঘোষ জানান ডালের আমৃতি তৈরি করার পদ্ধতি। তিনি বলেন, এর মূল উপকরণ হচ্ছে মাষকলাই। সঙ্গে আতপ চালের গুঁড়া। তিনি বলেন, প্রথমে কাঁচা মাষকলাইয়ের ডাল ভালো করে ভিজিয়ে রেখে শিলপাটায় গুঁড়ো করা হয়। এরপর তাতে পরিমাণ মতো চালের গুঁড়ো মেশানো হয়। এরপর কাঁচা আমৃতি তৈরি করে উচ্চ তাপমাত্রায় তেলে ভাজা হয়। পরে ভাজা আমৃতিগুলো চিনি দিয়ে মিশ্রিত শিরায় কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে তা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়। আর এভাবেই তৈরি হয় এই সুস্বাদু মিষ্টি।

শরৎকালের মিষ্টি হলেও রোজায় এর চাহিদা অনেক। ছবি: দেবাশীষ সাহা রায়
শরৎকালের মিষ্টি হলেও রোজায় এর চাহিদা অনেক। ছবি: দেবাশীষ সাহা রায়

বর্তমানে শহরের দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভান্ডার, নন্দ গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার, প্রেমানন্দ গ্র্যান্ড সন্স, শ্রীকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার, বল্লভ মিষ্টান্ন ভান্ডার, মা ভবতাঁরা টি স্টলসহ বিভিন্ন দোকানে এই মিষ্টি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চলতি রমজান মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০ কেজি ডালের আমৃতি বিক্রি হয় বলে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানান।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘোষপট্টির দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভান্ডারে ‘ডাইলের আমিত্তি’ কিনতে আসা শহরের গোপালবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ফারজানা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাইলের আমিত্তি’ অত্যন্ত সুস্বাদু। প্রায় প্রতিদিনই তাঁরা ইফতারিতে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে এ মিষ্টি খাবারটিও খেয়ে থাকেন।

শেরপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বজলুর রহমান বলেন, ইফতারিতে ডালের আমৃতি রোজাদারদের কাছে বেশ প্রিয়। তাই তাঁর প্রতিষ্ঠানের ইফতার মাহফিলে রোজাদারদের জন্য এ মিষ্টি রাখা হয়।

ডালের আমৃতি মূলত শরৎকালে তৈরি করা হয়। তবে রোজাদারদের চাহিদার কারণে রমজান মাসেও এটি তৈরি হয়।
নন্দগোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক ভোলানাথ ঘোষ বলেন, ‘রমজান মাসে এই মিষ্টির বেশ চাহিদা থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইফতার মাহফিলে এই মিষ্টি রোজাদারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।’