নাটোরে লিচু চুরি ঠেকাতে গাছে বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক ফাঁদ!

লিচু চুরি ঠেকাতে গাছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা হয়েছে। বাগাতিপাড়া, নাটোর, ২৪ মে। ছবি: প্রথম আলো
লিচু চুরি ঠেকাতে গাছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা হয়েছে। বাগাতিপাড়া, নাটোর, ২৪ মে। ছবি: প্রথম আলো

লিচু গাছের পাশে সাইনবোর্ড ঝুলছে। সাইনবোর্ডে লাল অক্ষরে লেখা—‘সাবধান! এই লিচু গাছের আশপাশে এবং লিচু গাছে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া আছে। বি.দ্র. কেউ যদি মারা যায় কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।’ 

বিপজ্জনক এই কাণ্ডটি করা হয়েছে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাকের লিচুগাছে। লিচু চুরি ঠেকাতে তিনি লিচু গাছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতেছেন। যেকোনো সময় এই ফাঁদে জড়িয়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে।
আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ রেলওয়ের মালঞ্চি স্টেশনে পোর্টার পদে কর্মরত। তাঁর বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশিতে। চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন থেকে তিনি মালঞ্চি রেলস্টেশনের পাশে সরকারি জমিতে বাড়ি করে পরিবার নিয়ে বাস করছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে আবদুর রাজ্জাকের গাছের কিছু লিচু চুরি হয়ে যায়। চোরের হাত থেকে বাকি লিচু ঠেকাতে তিনি বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতেন। খোলা তারের ওই ফাঁদের পাশে তিনি সাবধান বাণী জানিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এই ফাঁদের কারণে যে কেউ বিদ্যুতায়িত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।

লিচু চুরি ঠেকাতে গাছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা হয়েছে। বাগাতিপাড়া, নাটোর, ২৪ মে। ছবি: প্রথম আলো
লিচু চুরি ঠেকাতে গাছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা হয়েছে। বাগাতিপাড়া, নাটোর, ২৪ মে। ছবি: প্রথম আলো

লিচুগাছের মালিক আবদুর রাজ্জাক জানান, তিনি এ কাজ করেননি। লিচু চোরকে ভয় দেখানোর জন্য তাঁর ছেলে এ ফাঁদ তৈরি করেছেন। তবে কোন ছেলে করেছেন, তা তিনি বলতে চাননি। 

স্থানীয় সোনাপাতিল মহল্লার রবিউল আলম, জালাল উদ্দিন ও পেড়াবাড়িয়া মহল্লার লিমন জানান, তাঁরা ওই লিচু গাছে বিদ্যুতের তার জড়ানো দেখার পর গাছের মালিককে ফাঁদ খুলে নিতে বলেছেন। তাঁরা জানান, গাছটির পাশ দিয়ে শিশুসহ সাধারণ মানুষ চলাচল করে।

মালঞ্চি রেলস্টেশনে দায়িত্বরত ওয়েম্যান সানোয়ার কবীর জানান, তিনি এমন কাণ্ড দেখে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, চুরি ঠেকাতে লিচু গাছে পাহারার ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা আইনসিদ্ধ নয়। ঘটনাটি তদন্ত করে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।