মাদকবিরোধী অভিযানে অংশ নেন র‍্যাবের ৮০০ সদস্য

জেনেভা ক্যাম্পে র‌্যাবের অভিযানে ১৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ২৬ মে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
জেনেভা ক্যাম্পে র‌্যাবের অভিযানে ১৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ২৬ মে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ঢাকার মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযানে ১৫৩ জনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এর মধ্যে ৭৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাকি ৭৬ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদকবিরোধী মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

র‍্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিপুল প্রস্তুতি ছিল। র‍্যাব-২–এর নেতৃত্বে প্রায় ৮০০ জনের দল অভিযানে অংশ নেন। জেনেভা ক্যাম্পে প্রথমে ৫১৩ জনকে আটক করা হয়। সেখান থেকে তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে ১৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে ৭৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য ৭৬ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদকবিরোধী মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন নারী আছেন। এ অভিযানে ১৩ হাজার ইয়াবা বড়ি ও ৩০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।’

র‍্যাব সূত্র জানায়, জেনেভা ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযানে র‍্যাব-১, ২, ৩, ৪, ১০ ও ১১ অংশ নেয়। এতে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। বাধা আসতে পারে ভেবেই এতসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে উপস্থিত রাখা হয়েছে বলে র‍্যাব সূত্র জানায়।

আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টা থেকে এই অভিযান শুরু করে র‍্যাব। অভিযান শুরু করার আধঘণ্টার মধ্যে মাদক বিক্রির অভিযোগে শতাধিক লোককে আটক করা হয়।

৩ মে প্রধানমন্ত্রী র‍্যাবকে মাদকের বিরুদ্ধ অবস্থান নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। পরদিন থেকে র‍্যাব মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

দেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে গতকাল শুক্রবার রাতের বিভিন্ন সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরও নয়জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বরগুনা ও দিনাজপুর থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার ১২তম দিনে এখন পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার সংখ্যা ৭৩-এ দাঁড়িয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই মাদক ব্যবসায়ী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

জেনেভা ক্যাম্পে র‌্যাবের অভিযান। র‍্যাব-২ এর কার্যালয়ের সামনে আটক ব্যক্তিদের স্বজনেরা। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ২৬ মে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
জেনেভা ক্যাম্পে র‌্যাবের অভিযান। র‍্যাব-২ এর কার্যালয়ের সামনে আটক ব্যক্তিদের স্বজনেরা। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ২৬ মে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

১৯ মে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সরকার মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহনশীলতা) নীতি অবলম্বন করেছে।

গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যত দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, তত দিন এ অভিযান চলবে। আরও প্রত্যন্ত এলাকায় এ অভিযান ছড়িয়ে দেওয়া হবে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে, তাঁদের নাম অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে র‍্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ১৪ মে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে মাদক কেনাবেচায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোরতম আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।