বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণা: শেখ হাসিনা

নেতাজি ভবনে শেখ হাসিনাকে স্মারক উপহার দেওয়া হয়। উপহার দেন সুগত বসু ও কৃষ্ণা বসু। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
নেতাজি ভবনে শেখ হাসিনাকে স্মারক উপহার দেওয়া হয়। উপহার দেন সুগত বসু ও কৃষ্ণা বসু। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

দুই দিনের পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার রাতে ফিরে গেছেন নিজ দেশে। ফিরে যাওয়ার আগে গতকাল বিকেলে তিনি এসেছিলেন কলকাতার এলগিন রোডের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মহান নেতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বাসভবনে।

গতকাল দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডিলিট গ্রহণ করে বিকেলে কলকাতায় ফিরে সোজা চলে যান নেতাজি ভবনে। এ সময় নেতাজির বাসভবনে হাসিনাকে স্বাগত জানান পশ্চিমবঙ্গের পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাসহ বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। ছিলেন নেতাজির দৌহিত্র অধ্যাপক সুগত বসু এবং তাঁর মা সাবেক সাংসদ কৃষ্ণা বসুসহ পরিবারের সদস্যরা।
নেতাজি ভবনে এই প্রথম আসেন শেখ হাসিনা। এর আগে ছোট বোন শেখ রেহানা নেতাজি ভবন দেখে গেলেও শেখ হাসিনা এসেছেন এই প্রথম। অধ্যাপক সুগত বসু এবং কৃষ্ণা বসু ঘুরিয়ে দেখান নেতাজি ভবন, নেতাজি জাদুঘর, নেতাজি যে গাড়িতে করে গোপনে পাড়ি দিয়েছিলেন অজানা স্থানে, সেই গাড়ি, নেতাজির শয়নঘর থেকে অন্যান্য স্মারক।

নেতাজির ঐতিহাসিক সেই গাড়ির সামনে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ অন্যরা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
নেতাজির ঐতিহাসিক সেই গাড়ির সামনে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ অন্যরা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

১৯৪১ সালে ১৬ জানুয়ারি রাতে এই বাড়ি থেকে গোপনে যে গাড়িতে করে পাড়ি দিয়েছিলেন, সেই গাড়িটি রাখা আছে এই ভবনে। সেটি দেখানো হয় শেখ হাসিনাকে। নেতাজি যে ঘরে থাকতেন, অফিস করতেন, সেগুলো ঘুরে দেখেন শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাওয়া হয় নেতাজি জাদুঘরে। ১৯৩৯ সালে মহাজাতি সদন উদ্বোধনে কবিগুরুর যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, তা শোনানো হয় এখানে। শোনানো হয় কবিগুরুর নিজের কণ্ঠে আবৃত্তি করা ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ কবিতাটি। মুগ্ধ হয়ে শোনেন শেখ হাসিনা। গোটা জাদুঘরও ঘুরে দেখেন শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
পরে একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে। এখানে কলকাতার মেয়র শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় হাসিনার হাতে একটি স্মারক তুলে দেন। নেতাজির উদ্দেশে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর একটি বাণীর সিডিও তুলে দেন কৃষ্ণা বসু। নেতাজির হাতে লেখা সোনার বাংলা গানটি একটি ফ্রেমে বাঁধাই করে তা তুলে দেওয়া হয়। শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর বই তুলে দেন কৃষ্ণা বসুর হাতে। পরে শেখ হাসিনা এখানে বলেন, ‘নেতাজির জীবন সংগ্রাম আমাদের কাছে শিক্ষণীয়। তাঁর আত্মত্যাগ ছাড়া দেশ স্বাধীন হতো না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণা। তিনি কোথায়, আজ অবধি জানতে পারলাম না।’