পোশাকশ্রমিক আসমাকে ধর্ষণের পর হত্যায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

নারায়ণগঞ্জ বন্দরে পোশাকশ্রমিক আসমা বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে আদালত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানার টাকা আদায় করে আসমার পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জুয়েল রানা এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন বন্দর উপজেলার কুশিয়ারার নাসির উদ্দিন বিটল (৪০), খোকন মিয়া (৩২) ও ছফুন মিয়া (৩৪)।

মামলার রায়ে চার আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। তাঁরা হলেন ছালে আহাম্মদ, হাসান কবির, আব্দুল আজিজ ও মো. মিজান।

মামলার বাদী রাজা মিয়া জানান, ২০০৮ সালের ১১ মার্চ রাতে তাঁর মেয়ে আসমা বেগম কাজ শেষে শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তাঁকে অপহরণ করা হয়। পরদিন বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা এলাকার একটি ঝোপ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় আসমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনি (রাজা মিয়া) সাতজনকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলা করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন জানান, আসমার লাশের ময়নাতদন্তে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। এই মামলায় সাত আসামির মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্তে ২৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। ১৪ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। শুনানি শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণা করেন।

পিপি রকিব উদ্দিন বলেন, আদালত তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। চারজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এই রায়ে তিনি আংশিক খুশি। খালাস পাওয়া ব্যক্তিদের সাজা চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী নিহত আসমার বাবা রাজা মিয়া ও মা উম্মে হানি। ন্যায়বিচার পাননি জানিয়ে বলেন, দশ বছর ধরে তাঁরা ন্যায় বিচারের আশায় ছিলেন। সব আসামির মৃত্যুদণ্ড হবে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। চার আসামি খালাস পাওয়ায় তাঁরা এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত। এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী সুলতানুজ্জামান বলেন, তাঁরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নন। রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা আপিল করবেন।