কর্মস্থলে দুই কর্মকর্তা পোশাককর্মীকে ধর্ষণ করেন

ঢাকার আশুলিয়ায় এক নারী পোশাককর্মী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজ কর্মস্থলে দুই কর্মকর্তা তাঁকে ধর্ষণ করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ব্যাপারে ওই পোশাককর্মী থানায় মামলা করেছেন।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সহকর্মীরা আজ সোমবার কারখানায় ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এর পরপরই কর্তৃপক্ষ কারখানাটি আজকের জন্য ছুটি ঘোষণা করে।

আশুলিয়া থানার পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার বেশ কয়েকজন নারী কর্মী আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার একটি পোশাক কারখানায় রাতের পালায় কাজ করছিলেন। রাত তিনটার দিকে কারখানার চারতলার ফ্লোর ইনচার্জ সোহান ইসলাম (৩২) ও ফিনিশিং ইনচার্জ রুবেল (৩১) ওই তলায় কর্মরত এক নারী কর্মীকে একটি নির্জন কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। এরপর তাঁরা দুজনে ওই নারী কর্মীকে ধর্ষণ করেন। কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে ধর্ষণের শিকার ওই নারী বিষয়টি চেপে যান। 

আজ ঘটনাটি জানাজানি হলে সহকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা কাজ বন্ধ করে সোহান ও রুবেলকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে তাঁরা কারখানায় ভাঙচুর চালান। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ বেলা তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেন। এরপর পুলিশ সোহান ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। এর পরপরই কারখানাটি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
ধর্ষণের শিকার পোশাককর্মী জানান, ঘটনার পর তিনি বিষয়টি কারখানার উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ওয়াহিদুজ্জামানকে জানান। এরপরও তিনি সোহান ও রুবেলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বিষয়টি ফাঁস না করার জন্য উল্টো তাঁকে শাসিয়ে দেন এবং চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেন। এই ভয়ে তিনি বিষয়টি চেপে যান।
তিনি বলেন, ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর তিনি গতকাল আশুলিয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় সোহান, রুবেলসহ ওয়াহিদুজ্জামানকেও আসামি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার জন্য গতকাল ঘটনাস্থল কাঠগড়া গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের বাধার কারণে ওই কারখানায় ঢোকা সম্ভব হয়নি। এ সময় বেশ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, মাঝেমধ্যেই নারী শ্রমিকেরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না।
কারখানায় ভাঙচুর এবং ছুটি ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বলেন, প্রাথমিক তদন্ত ও ভুক্তভোগী মেয়েটির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।