মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীর অভিযানে আটক ৭৫

ধলপুরের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্মচারী স্টাফ কোয়ার্টারে পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযান শেষে ৫৬ জনকে আটক করে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। ধলপুর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা, ২৮ মে। ছবি: আবদুস সালাম
ধলপুরের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্মচারী স্টাফ কোয়ার্টারে পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযান শেষে ৫৬ জনকে আটক করে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। ধলপুর, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা, ২৮ মে। ছবি: আবদুস সালাম

মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীতে পৃথক দুটি মাদকবিরোধী অভিযানে মাদক বিক্রি ও সেবনের দায়ে ৭৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দুটি স্থান থেকেই ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মিরপুরের শাহ আলী থানার ঝিলপাড় এলাকায় আজ মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হয়। এতে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, স্পেশাল আর্মড ফোর্স ও ডগ স্কোয়াডের সদস্যরা অংশ নেন।

পুলিশের মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনারের (এডিসি) মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বেলা দুইটা থেকে অভিযান শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল সাড়ে চারটায়। শাহ আলী থানার ঝিলপাড় এলাকা থেকে মাদক বিক্রি ও সেবনের দায়ে পুলিশ দুজন নারীসহ ১৯ জনকে আটক করে। এই স্থান থেকে চার কেজি গাঁজা, ইয়াবা ও হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুর সিটিপল্লি এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৫৬ জনকে আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে। সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, স্পেশাল আর্মড ফোর্স ও ডগ স্কোয়াডের সম্মিলিত অংশগ্রহণে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতেখারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ অভিযানে সব মিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৬০০ জন সদস্য অংশ নেন। ধলপুর সিটিপল্লি এলাকা থেকে সাড়ে ছয় হাজার ইয়াবা বড়ি, ৪৫ বোতল ফেনসিডিল, ১০ কেজি গাঁজা ও ১ হাজার ৪৫০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় মাদক সেবন ও বিক্রির দায়ে ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নারী।

ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকা আগে থেকেই মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত। এখানে অনেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকেন। বাইরে থেকে অনেকে আসেন। বাইরে থেকে আসা ওই লোকদের মধ্যে মাদক ব্যবহারকরী ও বিক্রেতাও আছে।

রাজধানীসহ সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ অভিযানে এরই মধ্যে ১৪ দিনে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই মাদক ব্যবসায়ী।

গত শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে প্রায় এক হাজার র‍্যাব সদস্য দুই ঘণ্টাব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালান। যদিও সেই অভিযানে ক্যাম্পের মূল মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ ধরা পড়েনি। আটক করা হয় ১৫৩ জনকে। আর সেই রাতেই রীতিমতো আয়োজন করে রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। অভিযানে অংশ নেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য।

গতকালও কারওয়ান বাজার রেলবস্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ। ভাসমান মাদকের হাট হিসেবে পরিচিত কারওয়ান বাজার থেকে পুলিশ ৪ হাজার ৪০০টি ইয়াবা, ৮ কেজি গাঁজা ও ৪৪০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। আটক করা হয় ৫৩ জনকে।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসিক এলাকা গণকটুলী সিটিপল্লিতে বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযান চালায় পুলিশের রমনা বিভাগ। অভিযানে ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করা হয়। দুই ঘণ্টার অভিযানে পুলিশ মোট ১০৫ জন নারী-পুরুষকে ধরে পাশের লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের মাঠে জড়ো করে। অভিযানের সময় পুলিশ সিটিপল্লির বিভিন্ন জায়গায় ‘মাদকবিরোধী অভিযান চলছে’ লেখা সাইনবোর্ড লাগায়। পরে অবশ্য আটক ৫৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর ৩৬৩টি ইয়াবা বড়ি, ২৯ বোতল ফেনসিডিল ও দেড় হাজার লিটার চোলাই মদ জব্দ ও কারখানা সিলগালা করা হয়।