স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক, 'বন্দুকযুদ্ধের' ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ

মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট ও আসাদুজ্জামান খান কামাল
মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট ও আসাদুজ্জামান খান কামাল

দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট। এসব হত্যার বিষয়ে আরও সতর্ক হতে বলেছেন তিনি।

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন বার্নিকাট।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে হামলার ঘটনা ঘটলেই পাল্টা গুলি ছুড়ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তিনি বলেন, ‘মানুষকে মারার পরিকল্পনা আমাদের নেই। কাউকে হত্যা করার নির্দেশ সরকার আমাদের দেয়নি। অভিযান হচ্ছে গোয়েন্দা তালিকা ধরে।’ তিনি বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে যাঁরা আত্মসমর্পণ করছেন, তাঁদের কারাবন্দী করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ব্যক্তিকে আটক হয়েছে। কোনো ধরনের ‘ক্রসফায়ার’ হচ্ছে না। নিরাপত্তা বাহিনী আত্মরক্ষার্থে ‘গান ফায়ার’ করছে।

বন্দুকযুদ্ধে টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একরামসহ সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হবে। সব ঘটনাই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে তদন্ত করা হবে। যদি ন্যায়সংগতভাবে না হয়, তাহলে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্নিকাটের সঙ্গে তাঁর আলোচনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে আরেকটু সতর্ক হতে বলেছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, মাদকবিরোধী অভিযানের ব্যাপারে সরকার আর কী কী করেছে? তাঁকে বলা হয়েছে, এ অভিযানে সুশীল সমাজ, ছাত্র, শিক্ষক সবাই সরকারের সঙ্গে রয়েছেন। এ অভিযানে সরকারের পক্ষে সবাই সমর্থন দিয়েছেন।

দেশজুড়ে মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত ব্যক্তির সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ গত সোমবার রাতে ঢাকাসহ নয় জেলায় নিহত হন ১২ জন। এ নিয়ে গত ১৬ দিনে বন্দুকযুদ্ধে মোট ১২৪ জন নিহত হলেন। র‍্যাব ও পুলিশ বলছে, এর মধ্যে ১১৪ জনই মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধার করার দাবি করেছে তারা।

৩ মে র‍্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই শুরু হয় অভিযান।