তিন জেলায় 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৩

ঢাকার আশুলিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও খুলনার কয়রায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত হয়েছেন। গত শনিবার দিবাগত রাত ও গতকাল রোববার ভোরে এসব ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। আশুলিয়ায় নিহত ব্যক্তির নাম আনোয়ার হোসেন (৩২)। নবীনগরে কাজল মিয়া (৩০) ও খুলনার কয়রায় রবিউল গাজী (৩০) নিহত হয়েছেন।
পুলিশ বলেছে, আনোয়ার ও কাজল ডাকাত দলের সদস্য এবং রবিউল একটি বনদস্যু বাহিনীর প্রধান।
নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও খুলনা প্রতিনিধির পাঠানো খবর:
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, আনোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা টঙ্গাবাড়ি এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ওই এলাকায় যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতেরা পুলিশকে লক্ষ৵ করে গুলি চালায়। জবাবে পুলিশও গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের একপর্যায়ে ডাকাতদের প্রায় সবাই পালিয়ে গেলেও আনোয়ার গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল, দুটি গুলি ও তিনটি রামদা উদ্ধার করেছে।
পুলিশ বলেছে, নিহত আনোয়ার নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার ভালুয়াকান্দি গ্রামের রাজু আহাম্মেদের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় থেকে নানা অপরাধমূলক কাজ করছিলেন।
সাভার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুল হাসান বলেন, আনোয়ারের বিরুদ্ধে গাজীপুরের জয়দেবপুর ও কালিয়াকৈর থানাসহ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এবং ঢাকার আশুলিয়া ও ধামরাই থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে।
নবীনগর থানা-পুলিশ বলেছে, শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নের আওয়াল সেতু এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত কাজল মিয়া ডাকাত দলের সদস্য। তিনি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের পূর্বপাড়ার গাজী মিয়ার ছেলে।
নবীনগর থানা-পুলিশের ভাষ্য, শনিবার রাতে বিটঘর ইউনিয়নের আওয়াল সেতু এলাকার মহেশ রোডে গাছের গুঁড়ি ফেলে একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে পুলিশ জানতে পারে। নবীনগর থানার টহল পুলিশ সেখানে গেলে গুলি চালায় ডাকাতেরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এরই একপর্যায়ে এক ডাকাত নিহত হন। পরে জানা যায়, তাঁর নাম কাজল মিয়া। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পাইপগান, দুটি কার্তুজ ও চারটি রামদা উদ্ধার করেছে।
নবীনগর থানার ওসি ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, নিহত ব্যক্তি এলাকার চিহ্নিত ও দুর্ধর্ষ ডাকাত। তাঁর বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক ও খুনের ঘটনায় একটি করে মামলাসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে কাজলের পরিবারের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে খুলনার কয়রা থানার পুলিশ বলেছে, গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার সুন্দরবনের সোনামুখী কেয়াখালী খাল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন রবিউল গাজী। তিনি উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের রুহুল আমিন গাজীর ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি গুলি, একটি রামদা, একটি ছুরি, চারটি হরিণের চামড়া, দুটি হরিণের শিং উদ্ধার করেছে।
কয়রা থানার ওসি শেখ শমসের আলী বলেন, রবিউল সুন্দরবনের বনদস্যু রবিউল বাহিনীর প্রধান। তাঁর বিরুদ্ধে কয়রা থানায় অস্ত্র আইনে চারটি, ডাকাতির তিনটি ও বন আইনে একটি মামলা রয়েছে। অভিযানে পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) পুলিশের চারজন সদস্য আহত হয়েছেন।