কুষ্টিয়ার ছাত্রলীগ নেতা হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেন, দাবি এসপির

কুষ্টিয়ায় গুলিতে নিহত ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল আলম হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের লোকজন ঝামেলায় পড়তে পারে মনে করে আত্মহত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল নাজমুলের মা নাজমা খাতুন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান তাঁর নিজ কার্যালয়ের এক সংবাদ বিফ্রিং করে এসব তথ্য জানান।

সংবাদ বিফ্রিংয়ের সময় নাজমুলের বাবা, মা, বোন ও স্ত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় নিজের বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল আলমের (২৭) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি কুষ্টিয়া শহরসংলগ্ন হাটশ-হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুর ফারাজীপাড়ার আলতাব হোসেনের ছেলে। জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন।

ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী নাজমুলের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে এসপি মেহেদী হাসান বলেন, আত্মহত্যার ঘটনার পর মা নাজমা খাতুন ছেলের ঘরে একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান ও একটি শটগানের গুলি দেখতে পান। ঝামেলা হতে পারে ভেবে এগুলো তিনি ব্যাগে করে বাড়ির পাশে লুকিয়ে রাখেন।

নাজমুলের কাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। ছবি: প্রথম আলো
নাজমুলের কাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। ছবি: প্রথম আলো

নাজমুল কেন, কী কারণে হতাশায় ছিলেন, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা জানি না। জানলি পারে ব্যাটাক কাছে করি রাখতাম।’

এর আগে কখনো ছেলের কাছে অস্ত্র দেখেছিলেন কি না, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে বাবা–মা দুজনই প্রথম আলোকে বলেন,‘না, কোনো দিন অস্ত্র দেখিনি।’

এসপি মেহেদী হাসান বলেন, অস্ত্র দুটি অবৈধ। ঘটনার পর একটা তাজা গুলি উদ্ধার হয়েছিল। নাজমা খাতুনের দেখানো জায়গা থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, একটি তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। ওয়ান শুটারগানেই নাজমুল আত্মহত্যা করেছেন। সেটার ভেতরে গুলির খোসা আছে। এবং রক্তের দাগ রয়েছে।

হতাশাটা কী ছিল, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসপি বলেন,‘তিন দিন পর জানতে পারবেন।’

নাজমুল আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। আজ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে নাজমুলের স্ত্রী আদালতে জবানবন্দি দেবেন।

পুলিশ, নাজমুলের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নাজমুল কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে ২০১৫ সালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাস করেন। কোনো চাকরি বা ব্যবসা করতেন না। নাজমুল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নাজমুল ছিলেন সবার বড়। নাজমুলের সবচেয়ে ছোট ভাই কয়েক বছর আগে অসুস্থ হয়ে নয় বছর বয়সে মারা যায়। তিন বোনের মধ্যে যমজ বোনের একজন বিয়ে করেছেন। অন্য দুই বোন পড়ালেখা করছেন। বাবা-মা ও বোনদের নিয়ে একই বাড়িতে থাকতেন নাজমুল। গত রোববার পরিবারের সম্মতিতে শহরের কানাবিল এলাকায় ঊর্মি খাতুনকে বিয়ে করেন তিনি।