হৃদ্রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ২৪ শতাংশই ধূমপায়ী

>
  • আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস
  • দিবসের প্রতিপাদ্য ‘তামাক ও হৃদ্‌রোগ’
  • তামাক ব্যবহারজনিত কারণে হৃদ্‌রোগে মৃত্যুতে কর্মক্ষম ব্যক্তিরা শীর্ষে
  • তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে

দেশে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে যত লোক মারা যায়, তাদের ২৪ শতাংশই ধূমপায়ী। বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগের অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়। এতে বলা হয়, তামাক ব্যবহারজনিত কারণে হৃদ্‌রোগে মৃত্যুতে কর্মক্ষম ব্যক্তিরা শীর্ষে। এর হার ৪১ শতাংশ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘তামাক ও হৃদ্‌রোগ’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতিবছর দেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে মারা যায় ১ লাখ ৬১ হাজার ২৫৩ জন। তামাক ব্যবহারের কারণে ৩০ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৪১ শতাংশ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। অর্থাৎ পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিরই মৃত্যু হচ্ছে। ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে হৃদ্‌রোগে মৃত্যুর হার ৩৭ শতাংশ। এ ছাড়া ১২ শতাংশ কিশোর-কিশোরী ধূমপানে আসক্ত। প্রতিবেদনে বলা হয়, তামাক ব্যবহার করেন দেশে এমন মানুষের সংখ্যা এখন ৪ কোটি ১৩ লাখ।

তামাক নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক প্রথম আলোকে বলেন, অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে হৃদ্‌রোগ অন্যতম প্রধান। দেশে তরুণদের হৃদ্‌রোগ হচ্ছে, এটা উদ্বেগের বিষয়। তামাক একবার শুরু করলে তা নেশা হয়ে যায়। তিনি বলেন, তামাকের উৎপাদন ও সহজলভ্যতা কমানো না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, তামাকে থাকা নিকোটিন ও অন্যান্য প্রায় সাত হাজার উপাদান রক্তবাহী নালিগুলোর গাত্রে অযাচিত পদার্থ জমতে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে। এর ফলে নালির সংকোচন-প্রসারণক্ষমতা কমে যায় এবং কোনো কারণে রক্তপ্রবাহ বেড়ে গেলে সেগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। রক্তপ্রবাহের গতি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় উচ্চ রক্তচাপ তৈরিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা নিকোটিন ও কার্বন মনোক্সাইড রক্তকণিকায় অক্সিজেনের সরবরাহ কমিয়ে দেয় এবং দেহের ভেতরে রক্তকণিকায় অনাকাঙ্ক্ষিত জটের সৃষ্টি করে। এসবের কারণে হৃদ্‌রোগ হয়।

তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সংগঠনগুলো আগামী বাজেটে এ খাতে উচ্চ কর ধার্য করার দাবি তুলেছে। সংগঠনগুলো বলছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশে কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কার্যকরী উপায় হচ্ছে তামাকপণ্যে কর বৃদ্ধি। তামাকের সহজলভ্যতা কমলে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত হবে অনেকে।