জয়পুরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে হাত বিচ্ছিন্ন

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রেলস্টেশনে আজ শুক্রবার ট্রেনের নিচে পড়ে ডান হাত হারান সেকেন্দার আলী। ছবি: প্রথম আলো
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রেলস্টেশনে আজ শুক্রবার ট্রেনের নিচে পড়ে ডান হাত হারান সেকেন্দার আলী। ছবি: প্রথম আলো

ট্রেনে কাটা পড়ে এক শ্রমিকের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তিনি রেললাইনের স্লিপার বসানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন। আজ শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রেলস্টেশনের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 


ওই শ্রমিকের নাম সেকেন্দার আলী (৩৫)। তিনি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার চক দতিয়া গ্রামের শাহারুল ইসলামে ছেলে। সেকেন্দার রেলওয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি দুই মেয়ের জনক।

আক্কেলপুর রেলস্টেশন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আক্কেলপুর রেলস্টেশনের ১ নম্বর রেললাইনে স্লিপার বসানোর কাজ চলছে। এতে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ৭০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁরা রেলস্টেশনের দক্ষিণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ৩ নম্বর রেললাইন ঘেঁষে তাঁবু বানিয়ে থাকেন। চিলাহাটী থেকে আসা খুলনাগামী রকেট মেইল ট্রেনটি তিন নম্বর রেললাইন দিয়ে আক্কেলপুর স্টেশনে আসার সময় সেকেন্দার আলী তাঁবু থেকে বের হচ্ছিলেন। অসাবধানতায় তিনি ট্রেনের নিচে পড়ে যান। এতে তাঁর ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে গিয়ে সেকেন্দার আলীর বিচ্ছিন্ন হওয়া ডান হাতের ক্ষতস্থান ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় দেখা যায়। বিছানায় শুয়ে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন আর বিলাপ করছিলেন, ‘আমার হাত-পা কাটা গেলে আমার দুই মেয়ের কী হবে? আমি কি বাঁচব?’ বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা রাধেশ্যাম আগরওয়ালা প্রথম আলোকে বলেন, সেকেন্দার আলীর ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সেকেন্দার আলীর চাচাতো ভাই রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সেকেন্দার তাঁবুর ভেতর খাওয়াদাওয়া সেরে বাইরে বের হলে অসাবধানতাবশত রকেট মেইল ট্রেনের ধাক্কায় নিচে পড়ে যান। ট্রেনটি অতিক্রম করার পর সেকেন্দার আলীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।’

ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনের সুপারভাইজার আবদুস সবুর বলেন, ‘সেকেন্দার আলী আমাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একজন স্থায়ী শ্রমিক। আমরা তাঁর চিকিৎসা করছি।’