জীবনের অধিকার এভাবে কেড়ে নেওয়া যায় না

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১০ বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আজ শনিবার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ এ বিবৃতি পাঠান।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মফিদুল হক, গোলাম কুদ্দুছ ও হাসান আরিফ।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সারা দেশে যে মাদকবিরোধী অভিযান চলছে, তার যৌক্তিকতা আমরা অনুধাবন করি। দেশে খুব কম পরিবার আছেন, যাঁরা মাদকের ভয়াবহতা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছেন। তাই সংগত কারণে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনও এই অভিযানে প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন, যা অভিহিত করা হচ্ছে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বলে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থায় এমন মৃত্যু কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। সংবিধানে প্রদত্ত জীবনের অধিকার এ ভাবে কেড়ে নেওয়া যায় না।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু নিহত ব্যক্তি সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। টেকনাফে নিহত পৌর কমিশনার একরামের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার পূর্ব অভিযোগের কথা জানা যায়নি। তাঁকে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন পৌর মেয়র। তাঁর পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে হত্যা-পূর্ব ফোনালাপ সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করেছেন, যা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে অকল্পনীয়। এ রকম একটি ঘটনাই সমগ্র অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ ও জনগণকে আতঙ্কিত করতে যথেষ্ট।
বিবৃতিতে যত দ্রুত সম্ভব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে সঠিক তথ্য প্রকাশের মধ্য দিয়ে ভয়ভীতি থেকে মানুষকে মুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।