ভাড়া আদায়ের 'নৈরাজ্য' ও 'পদে পদে হয়রানি'র শিকার হচ্ছে: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

ঈদযাত্রায় যাত্রীসাধারণ যাত্রাপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ‘নৈরাজ্য’ ও ‘পদে পদে হয়রানি’র শিকার হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি সংগঠন। তারা দ্রুত এই নৈরাজ্য বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সমিতির উদ্যোগে ঈদযাত্রা পর্যবেক্ষণ কর্মসূচিতে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের গত কয়েক দিন রাজধানীর বিভিন্ন বাস কাউন্টার, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সময় সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, টিকিট অব্যবস্থাপনা, সড়ক অব্যবস্থাপনাসহ ঈদযাত্রার নানা ক্ষেত্রে গলদ থাকায় যাত্রীরা পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছে। ভাড়া নৈরাজ্যে ও যাত্রী হয়রানি প্রতিরোধে বিআরটিএ ও বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে প্রতিবছরের মতো গতানুগতিক পদ্ধতিতে ভিজিল্যান্স টিম বা মনিটরিং কমিটি গঠন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে কোথাও তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুর্ভোগের শিকার যাত্রীরা রাস্তায় কারও সহযোগিতা পাচ্ছে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকা যাত্রীরা রাস্তায় ইফতার বা সাহ্‌রি করতে পারছে না। এসব দুর্ভোগের শিকার যাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় সরকারের লোকজন ও সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছে যাত্রীস্বার্থ সংরক্ষণকারী এই সংগঠন।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার নানা উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও অল্প সময়ে বিশাল যাত্রীবহর সামাল দেওয়ার মতো জনবল বা প্রয়োজনীয় যানবাহন না থাকায় প্রতিবছর ঈদ আনন্দ যাত্রায় ভোগান্তি, হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানাভাবে যাত্রী সাধারণ হয়রানির শিকার হয়। প্রতিবছর ঈদে গণপরিবহন-সংকটকে পুঁজি করে ঘটে থাকে নানা অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও হয়রানি। প্রকৃতপক্ষে গণপরিবহনের চাহিদার বিপরীতে বিশাল ঘাটতি সামাল দিতে গিয়ে সরকার, প্রশাসন, পুলিশ, মালিক সমিতি, শ্রমিক সমিতির নেতাদের গলদঘর্ম হতে হয় বলে দাবি করেন তিনি।

দেশের প্রায় প্রতিটি মহাসড়কে চলমান উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ, বিভিন্ন মহাসড়কে রাস্তার মধ্যে প্রবল বর্ষণের কারণে সৃষ্ট গর্ত, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার, বিভিন্ন রোডের বিভিন্ন স্পটে রাস্তার ওপর বসা হাটবাজার, মহাসড়কে চলাচলকারী অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অযান্ত্রিক যান এবারের ঈদযাত্রায় যানজটের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। এ ছাড়া নৌপথে দুর্যোগপূর্ণ মৌসুম চলছে। তাই নৌপথে ওভারলোড কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা না হলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ব্যাপক আশঙ্কা আছে।
আজকের সভায় আলোচনা করেন গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপকমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ, সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সমন্বয়ক মো. সামসুদ্দীন চৌধুরী, লায়ন মাহমুদুল হাসান রাসেল, তৌহিদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটির আহ্বায়ক আজহারুল আলম জিকু, জিয়াউল হক চৌধুরী, মিলাদ উদ্দিন মুন্না, আজিজুল হক চৌধুরী, মো. শাহিন, কাজী মো. সালাউদ্দীন প্রমুখ। এতে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করেন।