মাশরাফি ঘোড়ায় চড়লেন, ঢোলও বাজালেন

শোভাযাত্রায় মাশরাফি ঢোল বাজান। ছবি: কার্ত্তিক দাস
শোভাযাত্রায় মাশরাফি ঢোল বাজান। ছবি: কার্ত্তিক দাস

বৈরী আবহাওয়া। তবুও কাকডাকা ভোরেই জড়ো হতে শুরু করেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাতটার আগেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে নড়াইল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠ। ছাত্র-শিক্ষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে শতাব্দী প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। 

উদ্দেশ্য একটাই। এসএসসি ব্যাচ-৯৯ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া। আরেকটি কারণও আছে এই ভিড়ের—বাংলাদেশ ক্রিকেট ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা হাজির থাকবেন অনুষ্ঠানে। তিনি নড়াইল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৯৯৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
মাঠে তৈরি করা হয় বিশাল প্যান্ডেল। প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটারের সহযোগিতায় ‘আলোর পথিক-৯৯ নড়াইল’ নামে সংগঠনটি আয়োজন করে নানা অনুষ্ঠানের। মাশরাফির ছবি-সংবলিত ফেস্টুন ছিল বিদ্যালয় চত্বরের চারপাশে। প্রধান গেটের সামনে তৈরি করা হয় তোরণ।
সকাল সাড়ে সাতটায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী আয়োজন। ঘোড়ার গাড়ি, ঢাকঢোলসহ নানা আয়োজন ছিল শোভাযাত্রায়। এখানেও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন মাশরাফি। তিনি চড়েছেন ঘোড়ায়, চালিয়েছেন ঘোড়ার গাড়ি, আবার কখনো বাজিয়েছেন ঢোল। শহর ঘুরে ফিরেছেন বিদ্যালয় চত্বরে। সকাল নয়টায় শুরু হয় ব্যাচের বন্ধুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়। দুপুরে প্রীতিভোজ, বিকেলে আলোচনা সভা আর সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠান।

ঘোড়ার গাড়িতে মাশরাফি। ছবি: কার্ত্তিক দাস
ঘোড়ার গাড়িতে মাশরাফি। ছবি: কার্ত্তিক দাস

অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে নিজের শিক্ষাজীবনের স্মৃতিচারণা করেন মাশরাফি। বলেন, স্কুলমাঠে রয়েছে তাঁর নানান স্মৃতি। এই মাঠ ফুটবল-ক্রিকেট খেলে কাটিয়েছেন বহু বিকেল। তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন, স্কুলজীবনের মাশরাফি আর এখনকার মাশরাফির মধ্যে বোধ হয় অনেক পার্থক্য। কিন্তু মাশরাফি আগের মতোই আছেন। এ সময় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান মাশরাফি।

পরে সন্ধ্যায় আতশবাজির ঝলকানিতে বর্ণিল হয়ে ওঠে নড়াইল শহরের আকাশ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. এমদাদুল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খুলনা বিভাগীয় সহকারী পরিচালক মো. ইমরান আলী।