অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে রোহিঙ্গা নেতাকে গলা কেটে হত্যা

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী-২ ময়নারঘোণা আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গা নেতা আরিফ উল্লাহকে (৪৫) গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে আশ্রয়শিবিরের অভ্যন্তরে সি ওয়ান ব্লকসংলগ্ন এলাকায় তাঁকে হত্যা করা হয়। অন্তর্দ্বন্দ্বের জের ধরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতেই তিনি খুন হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।

পুলিশের ভাষ্য, গত ১৯ জানুয়ারি রাতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে বালুখালীর তাজনিমারঘোনা আশ্রয়শিবিরের মাঝি (নেতা) মো. ইউসুফকে। ওই দিন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা ময়নাঘোনা আশ্রয়শিবিরে গিয়ে আরিফ উল্লাহর ওপর হামলা চালিয়েছিল। আরিফ উল্লাহ ওই দিন প্রাণে রক্ষা পেলেও সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হন তাঁর ছোট ভাই মৌলভি মুহিব উল্লাহ।

রোহিঙ্গারা বলছেন, আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নাগরিকদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন আরিফ উল্লাহ। তাঁর নেতৃত্বে আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিকত্বসহ নানা অধিকারের আন্দোলনে শামিল হন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের সি ব্লকের প্রধান মাঝি ছিলেন। তাঁর বাবার নাম এখলাছ মিয়া।

এই শিবিরের রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আলম ও তৈয়ুব উল্লাহ বলেন, আরিফ উল্লাহ উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। রোহিঙ্গাদের সপক্ষে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে কথা বলে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়াই ছিল তাঁর মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু রোহিঙ্গা জঙ্গিরা তাঁর এই উত্থানকে সহ্য করতে পারছিল না। এ জন্য তাঁকে হত্যা করে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, রোহিঙ্গাদের হাতেই রোহিঙ্গা নেতা আরিফ উল্লাহ খুন হয়েছেন। এর আগেও তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরার চেষ্টা চলছে।