ঝিনাইদহে দুই বন্ধুর লাশ উদ্ধার, পুলিশের সন্দেহ আত্মহত্যা

দিনের বেশির ভাগ সময় একসঙ্গে থাকতেন দুই বন্ধু রিপন আর আওয়াল। মৃত্যুও একসঙ্গে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের মাঠে পাশাপাশি পাওয়া যায় তাঁদের লাশ। কাছেই ছিল দুটি বিষের বোতল। গ্রামবাসী আর পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, তাঁরা একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছেন। লাশের পাশে একটি চিঠিও পেয়েছে পুলিশ। সেখানে লেখা, ‘বাবা-মাকে কষ্ট দিতে এই দুনিয়ায় আর থাকব না। তাই দুই বন্ধু আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম।’

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। রিপন হোসেন (২৩) ওই গ্রামের জুদবক্স হোসেনের ছেলে। আর আওয়াল হোসেন (২২) একই গ্রামের বিশারত হোসেনের ছেলে। তাঁরা দুজনই হরিণাকুণ্ডু সরকারি লালন শাহ কলেজের ছাত্র ছিলেন।

তবে রিপনের বাবা জুদবক্সের বরাত দিয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, তাঁদের পারিবারিক বা ব্যক্তিগত এমন কোনো বিরোধ ছিল না যে তাঁরা আত্মহত্যা করতে পারেন। এরপরও কেন তাঁরা এভাবে মারা গেলেন, তা পরিবার দুটি বুঝে উঠতে পারছে না।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল রানার ভাষ্য, রিপন ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতেন। আওয়াল একই দলের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন।

বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিয়ার রহমানের ভাষ্য, তাঁরা দুজনই খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। সব সময় একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। ছাত্ররাজনীতিও করতেন একসঙ্গে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে তাঁরা দুজনই নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের পাননি। রাতে তাঁরা বাড়ি ফেরেননি। সকালে গ্রামের লোকজন দেখতে পান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে রিপন আর আওয়ালের মৃতদেহ পড়ে আছে। এই দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে দুজনের লাশ এবং পাশে দুটি বিষের বোতল ও চিঠি দেখতে পান।

ওসি জানান, লাশের মুখে বিষের গন্ধ রয়েছে। মুখের ভেতর থেকে লালাও বের হয়েছে। তাঁরা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, দুই বন্ধু আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। দুজনের লাশ মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।