ঢাবিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বসানো হবে নিরাপত্তা চৌকি: ভিসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) আখতারুজ্জামান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হবে। নিরাপত্তা চৌকিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী দায়িত্ব পালন করবে। কোটা আন্দোলনের মতো স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন কিছু অশুভ শক্তির অনুপ্রবেশের ফলে নষ্ট হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ভিসি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রক্টরের অনুমতি ছাড়া বহিরাগত ব্যক্তিরা ক্যাম্পাসে অবস্থান ও ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। একই সঙ্গে বহিরাগতরা কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রক্টরের অনুমতির প্রয়োজন। গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভার এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বাজারঘাটের জায়গা নয়। এটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জায়গা। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপাদান এখানে সম্মিলন ঘটে। যেহেতু এটি গণতন্ত্রের সূতিকাগার এখানে সকল প্রকার কর্মসূচি পালিত হবে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিতর্ক, কবিতা, গানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে এ সকল কাজে এখানে সবাই আসবে। কিন্তু আমাদের শিক্ষার্থীদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সাধারণ জীবন বিঘ্নিত হয় এমন বহিরাগতদের অযথা অবস্থান এখানে কাম্য নয়। এখানে বহু মানুষ এসে জায়গাটিতে নষ্ট করবে এটি করতে দেওয়া যায় না।

আখতারুজ্জামান বলেন, বহিরাগত ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমরা শিগগিরই কিছু নিরাপত্তা চৌকি বসাব। যাতে ভ্রাম্যমাণ মানুষ অন্য কোনো গোষ্ঠী এখানে এসে হঠাৎ করে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে। কেউ এসে হঠাৎ করে মাইক দিয়ে আওয়াজ তুলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবে—এটি আমরা বরদাশত করব না। শিক্ষা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় স্বাগত জানায়। স্বাভাবিক জীবনে ব্যাঘাত ঘটায় ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নষ্ট করে—এমন বহিরাগতদের এখানে অবস্থান আমাদের কাম্য হতে পারে না। আমরা দেখেছি, অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গাড়ি প্রবেশ করে। এটা বন্ধ করা হবে। আমরা সড়ক ব্যবস্থাপনা করব। যেমন ফুলার রোডে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানো রোধে সড়ক গতিরোধক বসিয়েছি। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস তারা যেন নিরাপদ থাকে আমরা সেই চেষ্টা করব। নিরাপত্তা চৌকি মানে ক্যান্টনমেন্ট না, পুলিশ পোস্ট না, এখানে আমাদের সিকিউরিটি গার্ড থাকবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকটি যাতে বসতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।

শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, ক্লাস পরীক্ষায় বাধা দেওয়া কোনো ক্রমেই শুভ পদক্ষেপ নয়। বিগত কয়েক মাস ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেখতে পাচ্ছি। কেউ কেউ বাধা প্রদান করছে। সেগুলোকে আমরা কোনো ক্রমেই স্বাগত জানাই না। এটা একে বারেই নিরুৎসাহিত করি এবং বলি ওই ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে তারা যেন ফিরে আসে। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন হয় এমন কোনো বক্তব্য, আচরণ ও উসকানি যেন কেউ না দেয়।

কোটা আন্দোলনে অশুভ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছে উল্লেখ করে আখতারুজ্জামান বলেন, কোটা আন্দোলন একটি স্বতর্স্ফুত আন্দোলন ছিল। হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিয়েছে। আমরা নৈতিক সমর্থন দিয়েছি। সময়ের আবর্তে বিভিন্ন অপশক্তি ও অশুভ শক্তি এতে ঢুকে পড়ল। এমন একটি অবস্থায় গেল যে এদের পরে গোপন জায়গা থেকে ভিডিও বার্তার মধ্য দিয়ে আন্দোলন করতে হলো। স্বতর্স্ফূত আন্দোলনকে দুষ্টচক্র নষ্ট করে ফেলল। কিছু অপশক্তি ও অশুভ শক্তির অনুপ্রবেশের ফলে ভালো একটি আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে গেল।