ধরপাকড় হলেই প্রতিবাদ

পরোয়ানা বা মামলা ছাড়া কোনো নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করলে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিলেটের বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। গত বুধবার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে ১২টায় নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা শ্রমিক দলের এক কর্মীকে আটক করেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক টানা ৪০ মিনিট ঘটনাস্থলে অবস্থান করে ওই কর্মীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার পর এ কৌশল অবলম্বনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
আরিফুল হক গতকাল বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে বলেছি, নির্বাচনে সবাই সমান সুযোগ পাচ্ছে না। শহরে ধানের শীষের পোস্টার লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই মধ্যরাতে নগরবাসীকে নিয়ে আমি প্রতিকার চেয়ে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে দাবি আদায় করেছি।’ তিনি জানান, এখন থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা কোনো মামলা ছাড়া ধানের শীষের কর্মী-সমর্থক কাউকে গ্রেপ্তার করলে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করবেন।
বুধবার দিবাগত রাতে সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে নেতা-কর্মীসহ আরিফুল হকের অবস্থান করার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত প্রায় ১২টার দিকে ওই এলাকায় দুজন কর্মী ধানের শীষের পোস্টার সাঁটাচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকজন যুবক বাধা দেন। কর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে পোস্টার লাগানোর চেষ্টা করলে মারধর করে পাশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। খবর পেয়ে আরিফুল হক বন্দরবাজার ফাঁড়ির সামনে গিয়ে পুলিশের কাছে কর্মী আটকের কারণ জানতে চান। পুলিশ কিছু না বলায় তিনি ফাঁড়ির সামনে একটি চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন। এ সময় তাঁর সঙ্গে রাস্তায় অবস্থান নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ কলিমউদ্দিন আহমদ, জেলার সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, নগর বিএনপির সহসভাপতি সালেহ আহমদ, ছাত্রদলের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরীসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সালেহ আহমদ বলেন, প্রচার শুরুর পর থেকেই ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। জুলাই নগরের ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকায় তাঁর বাসায় তল্লাশির মধ্য দিয়ে এ তৎপরতা শুরু হয়। এরপর এক সপ্তাহে অন্তত ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মীর বাসায় পুলিশ গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাতের ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সাহস ফিরে আসছে। আমরা মেয়র প্রার্থীর নেতৃত্বে এ রকম প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ছাত্রদলের নেতা মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রায় রাতেই তল্লাশি চালানোয় অধিকাংশ নেতা-কর্মী আর নিজ বাসায় থাকছেন না। তিনি নিজেও বাসায় থাকছেন না জানিয়ে বলেন, এ অবস্থায় বিএনপির প্রতি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি বাড়ছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, পুলিশ অযথা কাউকে আটক করছে না। ওই রাতের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আরিফুল হক-সমর্থক দুই কর্মীর সঙ্গে বচসা হয় কয়েকজন যুবকের। ফাঁড়ি পুলিশের সামনে ঘটনা ঘটায় পুলিশ মারধরের শিকার দুজনকে ফাঁড়িতে নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল। এ সময় আরিফুল হক সেখানে যান।