কোটা সংস্কারের বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্বচ্ছ হতে হবে

ছবি: হাসান রাজা
ছবি: হাসান রাজা

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীদের ওপর শুধু পুলিশই নয়, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও হামলা চালাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের ধরা হচ্ছে না। এসবের প্রতিবাদও করতে দেওয়া হচ্ছে না। অবস্থা এমন হয়েছে যে অনেকে ভয়ে কথা বলছেন না। কথা বললে আবার জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন তকমা দেওয়া হচ্ছে। 

আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংলাপ অনুষ্ঠানে উদ্বিগ্ন নাগরিকদের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়েছে। ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ন্যায্য দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’। সংলাপ সঞ্চালনা করেন নারীনেত্রী খুশী কবির।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, সামগ্রিকভাবে দেশের যে পরিস্থিতি হয়েছে তাতে কথা বলা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য যত কিছু থাকা দরকার, সবকিছুই করা হচ্ছে হীরক রাজার দেশের মতো।
আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সারা হোসেন বলেন, কোটা বিষয়ে যাঁরা সংস্কার চাচ্ছেন, তাঁদের ওপর যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে, সেটা সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
সংলাপে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের পক্ষে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন আইনজীবী রফিক আহমেদ সিরাজী। এতে বলা হয়, কোটা সংস্কারের বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্বচ্ছ হতে হবে। সরকারের সত্যিকারের সদিচ্ছা থাকলে প্রশাসন, পুলিশ এবং ছাত্র সংগঠনের ক্যাডার দিয়ে এ ধরনের নিপীড়কের ভূমিকা নেওয়া সম্ভব হতো না।
সংলাপে অংশ নিয়ে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে থাকা কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনের একজন নেতা রাশেদ খানের মা সালেহা বেগম তাঁর সন্তানের মুক্তি দাবি করেন। বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় রাশেদ খানের স্ত্রী রাবেয়া আলো বলেন, তাঁর স্বামী একজন সাধারণ ছাত্র।
সংলাপে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক ও নারী আন্দোলনের নেত্রী মালেকা বেগম, অধ্যাপক আমেনা মোহসীন, আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, শিক্ষা বার্তার সম্পাদক এ এন রাশেদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক লুবনা জেবিন, সাংবাদিক গোলাম মতুর্জা, শিক্ষক রেজাউর রহমান, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার প্রমুখ।