দুপুরে নারী ধর্ষণের পর হত্যা, রাতে 'পিটুনিতে' সন্দেহভাজন নিহত

যশোর সদর উপজেলায় ‘পিটুনিতে’ এক সন্দেহভাজন ধর্ষণকারী ও খুনি নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম ইরাদ হোসেন (২৬)। এক নারীকে (৬৩) ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করার অভিযোগে গতকাল সোমবার বিকেলে যশোর সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে এলাকাবাসী তাঁকে ধরে পিটুনি দেন। ওই দিন রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

ইরাদ হোসেন যশোর সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী কয়েকজন জানান, গতকাল সোমবার দুপুরে ইরাদ হোসেন প্রতিবেশী এক নারীকে ভাত রান্নার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নেন। ওই নারী এলাকায় জনপ্রিয় একজন ধাত্রী। এরপর বিকেল থেকে ওই নারীকে খুঁজে না পাওয়ায় এলাকাবাসী ইরাদ হোসেনকে সন্দেহ করেন। লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন। এতে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে তাঁকে পিটুনি দেন। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, তাঁর বাড়ির পাশে হাঁস-মুরগির ঘরে প্লাস্টিকের বস্তার মধ্যে ওই নারীর লাশ রয়েছে। সন্ধ্যায় হাঁস-মুরগির ওই ঘর থেকে প্লাস্টিকের বস্তার ভরা নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর এলাকার লোকজন পিটুনিতে আহত ইরাদ হোসেনকে স্থানীয় একজন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাঁকে বসুন্দিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাতে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ১২টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় পুলিশ তাঁকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আবদুর রশিদ এ সময় তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসক মো. আবদুর রশিদ বলেন, ‘হাসপাতালে আনার অনেক আগেই ইরাদ হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।’

যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) হায়াৎ মাহমুদ বলেন, ইরাদ হোসেন সোমবার দুপুরে এক নারীকে ধর্ষণ করেন। এরপর তিনি ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এলাকাবাসী তাঁকে ধরে পিটুনি দিয়ে বসুন্দিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে এনে পুলিশের হাতে তুলে দেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

হায়াৎ মাহমুদ বলেন, ইরাদ হোসেন এলাকায় খুব খারাপ প্রকৃতির লোক বলে পরিচিত। ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকার পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই মামলায় ইরাদ এক নম্বর আসামি। ওই ঘটনায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মাস ছয়েক আগে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের হয়ে আসেন।
এসআই হায়াৎ মাহমুদ বলেন, নিহত ওই নারী ও ইরাদ হোসেনের লাশের ময়নাতদন্ত আজ মঙ্গলবার যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। দুটি ঘটনায় পৃথক দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।’