ইলিশের চাঁদপুরে মাছের চাহিদা মেটাচ্ছে শরীয়তপুরের রুই-কাতলা

ইলিশের চাঁদপুরে শরীয়তপুরের রুই-কাতলায় ভরপুর। মাছঘাট, চাঁদপুর, ১৭ জুলাই, ২০১৮। ছবি: আলম পলাশ
ইলিশের চাঁদপুরে শরীয়তপুরের রুই-কাতলায় ভরপুর। মাছঘাট, চাঁদপুর, ১৭ জুলাই, ২০১৮। ছবি: আলম পলাশ

ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু চাঁদপুরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ এখনো আসা শুরু হয়নি। তবে চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলায় ইলিশ মাছের চাহিদা মেটাচ্ছে শরীয়তপুরের চাষ করা রুই-কাতলাসহ অন্যান্য মাছ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর রুই, কাতলা, মৃগেলসহ অন্যান্য মাছ নিয়ে একের পর এক ট্রলার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা মাছঘাটে ভিড়ছে। এসব মাছ স্থানীয় বিভিন্ন আড়তে নামানোর পর পাইকারদের মাধ্যমে কেনাবেচায় ব্যস্ত মাছঘাটের প্রায় ২০০ ব্যবসায়ী ও মৎস্যশ্রমিক।

ঘাটের মাছ ব্যবসায়ী নূরে আলম বলেন, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু এখনো তেমন কোনো ইলিশ ঘাটে আসা শুরু হয়নি। এ কারণে ইলিশের বাজার অনেকটাই দখল করে নিয়েছে পাশের শরীয়তপুর জেলায় নদী, খালে, ঝিলে ও পুকুরে চাষকৃত বড় আকারের রুই-কাতলা, মৃগেলসহ অন্যান্য মাছ। প্রতিদিন দুপুরে এক থেকে দেড় হাজার মণ মাছ শরীয়তপুর থেকে চাঁদপুর মাছঘাটে নামছে। এরপর পাইকারদের মাধ্যমে চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলায় চলে যাচ্ছে।

ঘাটের আরেক আড়তদার হজরত আলী বলেন, সারা দেশে চাঁদপুরের ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বছর এখনো তেমন কোনো ইলিশ আসেনি। তবে কয়েক দিন পর ইলিশ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েক দিন ধরে কিছু ইলিশ আসছে। চাহিদা বেশি থাকায় দামও একটু বেশি রয়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ কেজি ইলিশ ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়; ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের তুলনায় পাইকারি ক্রেতা বেশি থাকায় ইলিশের দাম কমছে না। তিন থেকে চার কেজি ওজনের রুই, কাতলা ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকায় পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে।

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান বলেন, এবার এখন পর্যাপ্ত ইলিশ না আসার কয়েকটি কারণ রয়েছে। নদীতে পানির প্রবাহ কম থাকা ছাড়াও নদীতে অসংখ্য চর-ডুবোচরের কারণে ইলিশের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে সাগর থেকে ইলিশ আসতে পারছে না। তবে জুলাইয়ের শেষে বৃষ্টি বেশি হলে আর নদীতে পানি বাড়লে আগস্টের শুরুতে প্রচুর ইলিশ আসতে পারে।