বাম দলের নতুন জোট

আটটি দল নিয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোটের আত্মপ্রকাশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: প্রথম আলো
আটটি দল নিয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোটের আত্মপ্রকাশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: প্রথম আলো

অপরাজনীতির বাইরে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি জোরদার করার উদ্দেশ্যে বাম দলগুলো বাম গণতান্ত্রিক জোট নামে নতুন একটি জোটের ঘোষণা দিয়েছে। আটটি রাজনৈতিক দল নিয়ে এ জোট।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ জোটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

জোটের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।

অনুষ্ঠানে বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ব্যবসা বাদ দিয়ে প্রকৃত চেতনায় ফিরতে হবে। ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার রুখতে হবে। সে লক্ষ্যেই এ জোটের আত্মপ্রকাশ।’

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এক বছর আগে বাম মোর্চা নিয়ে জোট গঠন হয়েছিল। সে জোটের ওপর ভিত্তি করেই বাম গণতান্ত্রিক জোট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি জানান, নতুন জোট গঠিত হলেও পুরোনো জোটের বিলুপ্তি হয়নি।

আট দল নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিপিবি সভাপতি বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে তাঁদের এ জোট। তবে নির্বাচনে অংশ নিতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। নির্বাচন তাঁদের সামগ্রিক আন্দোলনের অংশ।

নিজেদের জনপ্রিয়তা ও শক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিজেদের শক্তি নিয়ে অতিরিক্ত মূল্যায়ন করি না। কিন্তু জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, তা প্রতিফলিত করি।’

এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে যেসব বাম দল আছে, তাদের নিয়ে কোনো জোটের ভাবনা আছে কি না—এমন প্রশ্নে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যাঁদের পাকা মনে করেছেন, তাঁদের নিয়ে নিয়েছেন। যাঁরা পাকামি করে, তাঁদের আমাদের শিবিরে আনতে চাই না।’

নতুন এ জোটের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও জোটের প্রথম সমন্বয়ক সাইফুল হক। সেখানে জোটের পরবর্তী কর্মসূচি তুলে ধরা হয়। কর্মসূচি অনুযায়ী জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে ২৪ জুলাই সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ; একই দিনে ঢাকায় বিকেল চারটায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ; ৪ আগস্ট বিদ্যমান নির্বাচনী-ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে মতবিনিময় সভা এবং ১০ ও ১১ আগস্ট জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরে জনসভা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) সদস্য শুভাংশু চক্রবর্তী, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু প্রমুখ।