শিশু মায়া ধর্ষণ ও হত্যায় সৎবাবার মৃত্যুদণ্ড

বাগেরহাটের শরণখোলায় নয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে আলামিন হাওলাদার (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আলামিন নিহত শিশু মায়ার সৎবাবা। হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই বছর পর আজ বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ-১ ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও আদালত ওই আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

আলামিন হাওলাদার বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার মঠেরপাড়া গ্রামের ফজলুল হক হাওলাদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতের উপস্থিত ছিলেন। হত্যার শিকার শিশু মায়া শরণখোলা উপজেলার সদরের রায়েন্দা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালের উপজেলার মঠেরপাড়া গ্রামের আলামিনের সঙ্গে মায়ার মা পুতুল বেগমের বিয়ে হয়। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর সকালে আলামিন তাঁর স্ত্রী পুতুল বেগমকে ফোন করে মুরগি নিতে মায়াকে বাজারে পাঠাতে বলেন। ফোন পেয়ে একটি ভ্যানে করে মেয়েকে বাজারে পাঠান পুতুল বেগম। এরপর থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও শিশুটির সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতে পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানায়।

শরণখোলা থানা-পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে শিশু মায়ার সৎবাবা আলামিনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেন। আলামিনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরদিন মঠেরপাড়া গ্রামের লিটু মিয়ার ধানখেত থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় ২১ ‍ডিসেম্বর নিহত শিশুর নানা কামরুল হাসান দুলাল বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শরণখোলা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আমির হোসেন সৎবাবা আলামিনকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী খান সিদ্দিকুর রহমান এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ওজিয়ার রহমান।